পরকীয়ার জেরেই খুন হয়েছেন অপহৃত পাবনার যুবদল

নেতা শাহজাহান! পিবিআইয়ের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রকাশ | ১৩ এপ্রিল ২০২১, ২০:৫৩

পাবনা প্রতিনিধি

পরকীয়া ও আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করেই অপহরণের পর শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে জনৈক ব্যক্তির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে লাশ গুম করা হয়েছিল পাবনা জেলা যুবদল নেতা শাহজাহানের। পিবিআইয়ের তদন্তে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। 

পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) সবুজ আলী জানান, পাবনা শহরের শালগাড়িয়া গোরস্তান পাড়ার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে শাহাজাহান আলী (৪০) গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় শাপলা প্লাস্টিক মোড় থেকে নিখোঁজ হন। ১ এপ্রিল পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি জিডি করা হয়। ৫ এপ্রিল জেলার আটঘরিয়া উপজেলার গঙ্গারামপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আবুল কাশেমের বসতবাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভিতর থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি শনাক্ত করে।

এসআই সবুজ বলেন, নিহতের ভাই আব্দুল গফুর ৭ এপ্রিল পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ১০ এপ্রিল তিনি ও সহকর্মী এসআই সোহেল হোসেন তদন্ত শুরু করেন। পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার ও তদারককারী কর্মকর্তা ফজলে এলাহীর নির্দেশনায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এক দিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত আটঘরিয়া উপজেলার ডেঙ্গারগ্রামের তায়েজ প্রামানিকের ছেলে ইব্রাহিম প্রাংকে (২৮)  পলাতক অবস্থায় ঢাকার সাভারের সবুজবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পিবিআই সূত্র জানায়, পরকীয়া ও অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করে শাহজাহান আলীর সঙ্গে পাবনা শহরের জনৈক এক নারীর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ওই নারী শাহজাহান আলীকে হত্যার জন্য ইব্রাহিম প্রাংয়ের শরণাপন্ন হন। নীলনকশা অনুযায়ী ওই নারী ও তার অন্য সহযোগীরা ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল থেকে শাহজাহানকে অপহরণ করে ইব্রাহিমের আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যায়।

সূত্র জানায়, ওই বাড়িতে নেওয়ার পর কৌশলে শাহজাহান আলীকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের বড়ি খাইয়ে দেওয়া হয়।  খাবার পর ঘুমিয়ে গেলে আসামিরা ঘুমন্ত অবস্থায় হাত-পা বেঁধে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে ওই টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে ফেলে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।

এসআই সবুজ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ইব্রাহীম প্রাংকে সোমবার বিজ্ঞ আদালতে  প্রেরণ করা হয়। সে বিজ্ঞ আদালতে মামলার ভিকটিম শাহজাহানকে অপহরণপূর্বক হত্যা করে লাশ টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ভিতরে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। একই সঙ্গে অন্য আসামিদের নাম প্রকাশ করে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে।

 

যাযাদি/ এস