হারাগাছে মসজিদের টাকা আদায় নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, গ্রেফতার ৪

প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৫৭

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

রংপুরের কাউনিয়ার হারাগাছে মসজিদের আদায়কৃত টাকার কমিশন কেটে নেয়াকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের সংঘর্ষে নাজমুল হক (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়ছেন আরও দুইজন।

 

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার চেয়ারম্যানটারী সারাই জুম্মাপাড়া জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে ফজলে বারী ভেলু, তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও দুই ছেলে জীবন এবং রিপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

রংপুর মেট্টোপলিটন হারাগাছ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে রাতেই দয়াল মিয়া বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ ও বেশকয়েক জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

 

প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও মামলার বরাত দিয়ে হারাগাছ থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী অফিসার আব্দুর ছবুর খন্দকারের ভাষ্য, ওই মসজিদের কমিটি নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রেষারেষি চলছিল। মসজিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে কমিটির সদস্যরা মুসল্লিসহ স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছিলেন। এরমধ্যে চাঁদার ২৫ শতাংশ টাকা আদায়কারী ও কমিটির সদস্যরা নিতেন। এই ২৫ শতাংশ টাকা নেয়াকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর নতুন কমিটির সদস্য ফজলে বারী ভেলু (৫০) সঙ্গে পুরাতন কমিটির সদস্য নুর আলমের ভাই দয়ালের মাঝে বাকবিতন্ডা হয়। পরে মাগরিবের নামাজ শেষে আবারও দুইপক্ষের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় সাধারণ মুসল্লিরা তাদেরকে শান্ত করেন। পরে মসজিদ থেকে বাড়িতে ফেরার পথে ফজলে বারী ভেলু ও তার লোকজন দয়াল ও তারপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।  হামলায় দয়ালের ভগ্নিপতি সৎবাজার এলাকার মৃত আব্দুল হকের ছেলে নাজমুল হক সহ (৪৫), নূর আলম ও দয়াল আহত হন। পরে নাজমুল ও নুর আলমকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান নাজমুল। এছাড়া আহত নূর আলমকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়।

 

এসআই আব্দুর ছবুর খন্দকার বলেন, খবর পেয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ফজলে বারী ভেলু, তার স্ত্রী স্বপ্না এবং দুই ছেলে রিপন এবং জীবনকে আটক করে।

 

নিহতের স্ত্রী লাকী বেগম বলেন, তার স্বামী গ্রামের কারো সাথে কোন দিন তর্কে লিপ্ত হয় নাই। অথচ তাকে বিনা অপরাধে হত্যা  করা হয়েছে। তিনি স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন।

 

তবে ফজলে বারী ভেলু বলেন, দয়ালের সাথে তাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। নাজমুলের সাথে নয়। নাজমুল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

 

এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আব্দুর ছবুর খন্দকার বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য।

 

যাযাদি/ এমডি