শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

​মধুপুরে ঐতিহ্যবাহী বারতীর্থ স্নানোৎসব অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
  ১১ মে ২০২১, ১৯:৫৬

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শোলাকুড়ীতে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী বারতীর্থ স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শত বছরের অধিক সময় ধরে প্রতি বছর বৈশাখ মাসের অমাবস্যায় ওই পূণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কালক্রমে স্নানোৎসবকে ঘিরে মেলা বসে। দীর্ঘদিন প্রতিপালনের ফলে বরোতীর্থ স্নান সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে।

করোনা মহামারীর কারণে স্বল্প পরিসরে এ বছর স্নানানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতিবছর টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পুণ্যার্থীরা এ নির্দিষ্ট সময়ে মনোবাসনা পূর্ণ করার মানসে পূণ্যস্নানে অংশ নেয়। পূণ্যার্থীরা শোলাকুড়ী দীঘিরপাড়ে উপস্থিত হয়ে চিনি-কলা সহ বিভিন্ন দ্রবাদি দীঘিতে ফেলে স্বীয় দেবতাকে তুষ্ট করতে একাগ্রচিত্তে স্নান করে জীবনের সকল গ্লানি মুছে ফেলার প্রতিজ্ঞা করে থাকে।

বারতীর্থ স্নানোৎসবে আসা ঘাটাইলের রবীন্দ্র সাহা, রঞ্জিত বণিক, শেরপুরের উর্মি রায়, জামালপুরের মিনতি পাল, সিরাজগঞ্জের মানসী রাণী সাহা, ময়মনসিংহের চান্দু পাল সহ অনেকেই জানান, তারা মনোবাসনা পূর্ণ করার লক্ষ্যে প্রতি বছর এ পূণ্যস্নানে অংশ নেন। প্রতিবছর এ সময় লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়। কিন্তু এবার করোনা মহামারী থাকায় স্নানোৎসবে লোক সমাগম খুবই কম হয়েছে।

পূণ্যস্নানের আয়োজক কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিমল গোস্বামী জানান, করোনার কারণে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নিয়ম রক্ষার্থে ক্ষুদ্র পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতীমা ব্যতিত ঘটপুজা ও স্নানোৎসবের আয়োজন করা হয়।

মধুপুরের শোলাকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যার মো. আখতার হোসেন জানান, প্রতিবছর এ স্নানোৎসবে লক্ষাধিক পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। এবছর করোনার প্রভাবের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে কমিটির উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে মেলা বন্ধ রাখা হয়েছে।

জনশ্রুতি রয়েছে, নাটোরের জমিদার রাজা জগদীন্দ্র নাথ রায় বাহাদুরের মাতা অসুস্থাবস্থায় বারটি তীর্থ স্থানের গঙ্গা জলে স্নান করার ইচ্ছা পোষণ করেন। তার বিশ্বাস ওই গঙ্গা জলে স্নান করলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। মাতার ইচ্ছা পূরণ করতে জমিদার ১২টি তীর্থ স্থান থেকে গঙ্গা জল সংগ্রহ করে শোলাকুড়ীতে বিশালকার দীঘি খনন করে সেখানে মাকে স্নান করান। এতে তার মা আরোগ্য লাভ করেন। তখন থেকে ওই দীঘিতে প্রতি বছর বৈশাখের অমাবশ্যায় স্নানোৎসব হয়ে থাকে।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে