বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিয়ানীবাজারে লকডাউনে দুইগ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ : পুলিশসহ আহত অর্ধশত

বিয়ানীবাজার (সিলেট) প্রতিনিধি
  ২৪ জুলাই ২০২১, ১৯:১২

বিয়ানীবাজার উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের আলীনগর ও টিকরপাড়া এলাকাবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে অর্ধশত আহত হয়েছেন। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় আশাপাশ এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরী হয়। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ৫ রাউন্ড টিআরসেল নিক্ষেপ করে।

সংঘর্ষে টিকরপাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাংচুর করা হয়। এ সময় পুলিশের চার সদস্যসহ উভয় পক্ষের অর্ধশত গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১০/১২জনকে সিলেট এমএজি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া অন্যদের প্রথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, তিনদিন আগে আলীনগর গ্রামের অটোরিক্সা চালক নজর আলীর সাথে টিকরপাড়া এলাকার যুবক সাদিকসহ কয়েকজন প্রথমে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। এক পর্যায়ে যুবকরা অটোরিক্সা চালককে মারধর করে। বিষয়টি আলীনগর এলাকাবাসী জানার পর গ্রামজুড়ে উত্তেজনা শুরু হয়। বৃহস্পতিবারে ঘটনার জের ধরে শনিবার দুপুরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই গ্রামবাসী। সংঘর্ষ চলাকালে দুই গ্রামের মসজিদের মাইকে সংঘর্ষের ঘটনা প্রচার করা হলে শতশত মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সিলেট-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়ক দুই ঘন্টা অবরোধ হয়ে পড়ে। এ্যাম্বুলেন্সসহ বেশ কিছু পণ্য ও ব্যক্তিগত গাড়ি আটকা পড়ে।

স্থানীয় যুবক আবু হানিফ জানান, দুইদিন পূর্ব থেকে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিলো। শুক্রবার রাতে টিকরপাড়া এলাকার এক ব্যক্তি ধান ভাংতে রাইস মিলে গেলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। শনিবার দুপুরে মাইকের প্রচার করে দুই গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়ায়।

খবর পেয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) জাকির হোসেন, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে দুই গ্রামবাসীর উত্তেজনা প্রশমিত করা হয়। এতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সাময়িকভাবে শান্ত হয়।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ (সার্কেল) জাকির হোসেন জানান, গ্রামবাসীর ছোড়া ডিল থেকে পুলিশের ৩/৪জন সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ ৫ রাউন্ড টিআরসেল নিক্ষেপ করে। তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।

আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে উভয় গ্রামের তিনজন করে ছয়জন মুরব্বিদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে তাৎক্ষনিক বৈঠক করা হয়। এ সময় দুই গ্রামের মুরব্বিরা ফের সংঘর্ষ হবে বলে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ দায়িত্বশীলদের আশ^স্থ্য করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তির জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে দুই গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ কর্মকর্তা, স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় এবং উভয় পক্ষের মুরব্বিদের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে