শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বটিয়াঘাটায় বর্ষা মৌসুমে "হ্যানিকুইন" জাতের তরমুজের বাম্পার ফলন

বটিয়াঘাটা (খুলনা) প্রতিনিধি
  ২৮ জুলাই ২০২১, ১২:৪৯

খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলায় বৃষ্টি মৌসুমে ব্যাপক হারে তরমুজ চাষ শুরু করেছে চাষিরা। রবি মৌসুমের চেয়ে কম খরচে বেশি লাভ জনক হওয়ায় গ্রামের কৃষকরা বৃষ্টি মৌসুমের তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।

বটিয়াঘাটা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সুরখালী, জলমা, গঙ্গারামপুর, বটিয়াঘাটা সদর, বালিয়াডাঙ্গা, আমিরপুর ও ভান্ডার কোট এই ৭ ইউনিয়নের মধ্যে জলমা, বটিয়াঘাটা সদর, গঙ্গারামপুর ও সুরখালী ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে বর্ষা মৌসুমের তরমুজ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সুরখালী ইউনিয়নেই ২০ হেক্টর জমিতে বর্ষা মৌসুমের তরমুজ চাষ হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে তরমুজ চাষে পানি সমস্যা নেই, পোকামাকড়ের উপদ্রব কম এমনকি তরমুজের দাম বেশি তাই লাভও অনেক বেশি। রবি মৌসুমের তরমুজ চাষের থেকে বর্ষা মৌসুমের তরমুজ চাষে খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা বর্ষা মৌসুমের তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।

কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে যে সকল জাতের তরমুজ চাষ এবছর হচ্ছে তা হলো হানিকুইন,ব্লাক বেবি,ব্লাক কিং,ব্লাক হিরো, সুপার কুইন,আম্রুতা, আলেকজান্ডার ইত্যাদি।

এ ব্যাপারে সুফলভোগী সুন্দর মহল গ্রামের কৃষক মহানন্দ মন্ডল ও তরুন মন্ডল, পার্শ্বেমারি গ্রামের দেবপ্রসাদ মন্ডল এবং সুখদাড়া গ্রামের আহম্মাদ আলীর কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, আমাদের এলাকায় দায়িত্ব প্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি অফিসার ( বঙ্গবন্ধু জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত) সরদার আব্দুল মান্নান ভাইয়ের পরামর্শে বর্ষা মৌসুমে মৎস্য খামারের বেঁড়ীর আইলে পানি ও সম্পূর্ণ রোগবালাই ছাড়া তরমুজ চাষ করেছি এবং সময়ের তরমুজ চাষের থেকে অসময়ের তরমুজের দাম বেশি ও লাভজনক ।

ইতিমধ্যে কিছু কিছু সুফলভোগী তরমুজ চাষি বাজারে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে প্রস্তুতি গ্ৰহণ করেছেন বলে জানাগেছে ।

সুরখালী ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরদার আব্দুল মান্নান জানান, বরি মৌসুমে বটিয়াঘাটা ও পাশ্ববর্তী দাকোপ উপজেলার তরমুজ খুলনার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে আসছে । কিন্তু রবি মৌসুমে পানি ও পোকামাকড়ের উপদ্রব বেশি থাকায় খরচ হয় অনেক বেশি যে কারণে লাভ একটু কম কিন্তু বর্ষা মৌসুমে খরচ কম লাভ অনেক বেশি। গত বছরে আম্রুতা জাতের তরমুজ বেশি চাষ হয়েছিলো কিন্তু এবছর হানি কুইন ও ব্লাক বেবি জাতের তরমুজ বেশি চাষ হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এ সকল তরমুজ প্রতি হেক্টর জমিতে ৩৫ মেঃ টন ফলন হয়ে থাকে এবং প্রতিটি তরমুজ ৪/৫ কেজি ওজন হয়। যার কেজি প্রতি বাজার মূল্য ৩৫/৪০ টাকা।

সার্বিক বিষয় বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রবিউল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্ষা মৌসুমের তরমুজ চাষ কম খরচে বেশি ভালো হয়, তাই কৃষকরা বর্ষা মৌসুমে ঘেরের আইলে বা উঁচু জমিতে তরমুজ ব্যাপক ভাবে চাষ শুরু করেছে । যা গত বছরের তুলনায় ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে । আমরা কৃষি অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের প্রযুক্তি ও বিভিন্ন পরামর্শ সহায়তা প্রদান করে চলেছি। আশা করছি আগামীতে আরো বেশি বর্ষা মৌসুম তরমুজ চাষ হবে এবং কৃষকরা লাভবান হবে ।

যাযাদি/ এমডি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে