​পটুয়াখালী পৌর কবরস্থানে জলাবদ্ধতা

প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২১, ২১:৪২

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

 

একদিকে জলাবদ্ধতা অপরদিকে লাশ দাফনের জন্য ফাঁকা স্থান না থাকায় পটুয়াখালী শহরবাসীকে মৃতদেহ দাফন নিয়ে বিরম্বনায় পরতে হচ্ছে। নতুন করে কবরস্থানের জায়গা নির্ধারণ না করা কিংবা বর্তমান কবরস্থানের সংস্কার না করায় করোনার এই মহামারিতে ভোগান্তি বেড়েছে। এসব কারনে অনেক সময় মৃত দেহের যোগ্য সন্মান দেয়া যাচ্ছে না বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

 

প্রিয়জনের শেষ স্মৃতিটুকু ধরে রাখতে সকলেই তার স্বজনের কবরটি সংরক্ষণ করে রাখতে চান। তবে শত বছরের বেশি পুরাতন পটুয়াখালী পৌরসভার নিয়ন্ত্রনাধীন কবরস্থানে এখন আর কবর গুলো সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত কয়েক দশক যাবত একের পর এক কবর দেয়ায় অনেকের প্রিয়জনের কবরগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে একটু বৃষ্টিতেই কবর স্থানের সড়ক গুলোতে পানি উঠে যায়। এ ছাড়া পুরাতন কবর গুলো পানিতে ডুবে থাকে। ফলে এসব স্থানে নতুন কবর খুড়তে গিয়ে পানির মধ্যে কাজ করতে হয়। অনেক সময় বাধ্য হয়ে বাহির থেকে মাটি,বালি এনে কবর স্থান উচু করে কিংবা কাঠের বাক্স করে মরদেহ দাফন করতে হয়।

 

পটুয়াখালী পৌরসভা সূত্রে জানযায়, ২৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় নিয়ে ১৮৯২ সালে পটুয়াখালী পৌরসভা গঠিত হয়। পৌরবাসীর দাফনের জন্য সে সময়ে প্রায় সাত একর জমিতে পৌরসভার নিয়নন্ত্রনাধীন একটি কবরস্থান নির্মান করা হয়। তবে শত বছরের বেশি সময়ে শহরের জনসংখ্যা কয়েকগুন বৃদ্ধি পেলেও নতুন করে কবরস্থান নির্মান করা হয়নি। এসব কারনে পৌর কর্তৃপক্ষ কবরস্থানে স্থায়ী ভাবে কবর সংরক্ষন না করার জন্য নির্দেশনা দিলেও তা কেউ মানছেন না। বিশেষ করে শহরের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এবং তাদের স্বজনদের কবরগুলো যেমন বাঁধাই করে রেখেছেন তেমনি অনেকে আবার দুই থেকে তিন জনের বেশি যায়গা নিয়ে সীমানা নির্ধারন করেও রেখেছেন। এমন পরিস্থিতিতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অনেকটাই অসহায়।

 

কবরস্থানে জায়গা সংকুলন না হওয়ার পাশপাশি বর্তমান সময় জলাবদ্ধতার কারনে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এখন কবর দিতে হলে বিগত সময়ের থেকে বেশি অর্থ ব্যায় করতে হচ্ছে। কবরস্থানে কবর খোড়া শ্রমিকরা জানান, আগে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হলেও এখন মাটি ভরাট,বালি ফেলা, কাঠের বক্স তৈরী বাবদ আট থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এদিকে জলাবদ্ধতার কারনে অনেকেই প্রিয়জনের কবর জিয়ারত করতে পারছেন না।  ফলে দূরে দাড়িয়ে কবর জিয়ারত করতে বাধ্য হচ্ছেন ।

 

সমস্যার কথা স্বীকার করে পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘কবরস্থানের আশ পাশের এলাকা এবং সড়ক গুলো উচু হওয়ায় কবরস্থানের পানি বের হতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। গত বছর কবরস্থানে বালি ফেলে উচু করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তবে সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বালি ফেললে বর্তমান কবর গুলো বালির নিচে চাঁপা পরবে এ কারনে সেই প্রক্রিয়াটি বন্ধ করা হযেছে। তবে কবরস্থানের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সড়ক গুলোকে উচু করে কবরস্থানের জলাবদ্ধতার সমস্যার সমাধান করা হবে।’

 

এ ছাড়া পৌরবাসীর জন্য একটি নতুন একটি আধুনিক কবরস্থান নির্মানের কাজ ছরেছ বলেও জানান পৌর মেয়র।

 

ধর্মীয় অনুভুতি ও মৃতব্যক্তির সন্মান রক্ষায় পটুয়াখালী পৌর শহরের প্রধান কবরস্থান সংস্কার ও নতুন কবর স্থান নির্মানে সরকারের সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয় দ্রুত উদ্যোগ নিবে এমনটাই প্রত্যাশা শহরবাসীর।

 

যাযাদি/এসআই