​ মাথা গোজার ঠাঁই পাচ্ছে লক্ষ্মীপুরের ৪৩১ পরিবার

প্রকাশ | ৩০ জুলাই ২০২১, ১২:৫০

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

 

 

প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য দৃষ্টিনন্দন ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর ভাগ্য বদলে যাবে। তারা পাবে মাথা গোজার ঠাঁই। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৪৩১টি পরিবারের জন্য পুরোদমে সরকারি খাস জমিতে গৃহ নির্মাণের কাজ চলছে। অধীর আগ্রহে উপকারভোগীরা সময় পার করছেন কখন তাদের তাদের স্বপ্নের গৃহে উঠবে। ইতোমধ্যে ২২৫ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে জমির কবুলিয়ত, খতিয়ান, ডিসিআর এর কপি হস্তান্তর করা হয়েছে। আশ্রয়ণের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার মুজিববর্ষে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় গৃহহীন ও ভুমিহীন মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবাসন হিসেবে প্রদত্ত প্রায় ১০ একর খাস জমিতে গৃহ নির্মাণের কাজ চলমান রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।

 

বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম মান্দারী, দিঘুলী ও চরশাহী ইউনিয়নের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মাণাধীন ঘরের কাজ পরিদর্শন ও হস্তান্তরকৃত উপকারভোগীদের খোঁজ-খবর নেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা সহকরি কমিশনার (ভূমি) মো: মামুনুর রশিদ, পিআইও মোশারফ হোসেন, উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজাদ প্রমুখ।

 

সরেজমিনে গেলে বিবি কুলছুম, আব্দুল মন্নান, নাছিমা আক্তার, শাহ আলম, মোহছেনা, মরিয়ম বেগম, বিবি আয়শা, সেলিনা বেগম সহ সুবিধাভোগী উপকারভোগীগণ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে। প্রতিটি ঘরের কাজ সুন্দর হয়েছে। কোথাও কোন সমস্যা নেই। আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্য প্রাণভরে দোয়া করি। মহান আল্লাহ তাকে সুস্থ রাখুন এবং ভালো রাখুন। মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ উপহারের মাধ্যমে আমাদের মতো অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হওয়ায় আমরা আনন্দিত। একসময় আমরা যেখানে-সেখানে থাকতাম, এখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে থাকতেছি।

 

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের প্রতিটি গৃহে সরকারের প্রাক্কলিত মূল্য মোতাবেক অত্যন্ত স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার মাধ্যমে করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার, লক্ষীপুর সদর এর তদারকিতে নির্মাণ সামগ্রীর গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখেই এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।

 

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলাধীন চরশাহী ইউনিয়নের জালিয়াকান্দি মৌজায় ২টি প্রকল্প এলাকায় ৫৫টি গৃহ নির্মাণের জন্য প্রায় ২ একর অবৈধ খাস জমি উদ্ধার করে বালি ও মাটি ভরাটের মাধ্যমে ২৫টি ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকায় মাটি প্রস্তুতের পর ১৫টি ঘরের জানালা পর্যন্ত ইট গাঁথা শেষ হয়েছে।

 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ৪৩১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ কাজ চলছে। উপকারভোগীদের ২ শতাংশ জমি দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধাপাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। সবগুলো বাড়ি সরকার নির্ধারিত একই নকশায় হচ্ছে। রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেটসহ অন্যান্য সুবিধা থাকছে এসব বাড়িতে।

 

তিনি আরও বলেন, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলাধীন বিভিন্ন ইউনিয়নের ১৬টি প্রকল্প এলাকায় নির্মিত হচ্ছে এসব সেমিপাকা ঘর। এসব ঘর নির্মাণে প্রায় ১০ একর খাস জমি অবৈধ দখলদার ও স্থানীয় ভূমিদস্যুদের নিকট হতে উদ্ধার করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বেশিরভাগ প্রকল্প এলাকাই গ্রোথ সেন্টারের নিকটবর্তী। এতে করে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগসহ আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার সুযোগ রয়েছে।

 

জেলা প্রশাসক মো: আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরগুলোর নির্মাণশৈলী, গুণগত মান, অনুমোদিত ডিজাইন ও প্রাক্কলন অনুযায়ী ব্যয় হয়েছে। জেলায় ইতোমধ্যে ৩৬ একর খাস সম্পত্তি উদ্ধার করে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। 

 

তাছাড়া প্রকল্পের টেকসই, স্থায়ীত্ব এবং উপকারভোগীদের সুযোগ-সুবিধা ও জীবনমান উন্নয়নের জন্য কানেক্টিং রাস্তা, গাইড ওয়াল, প্যালাসাইটিং ওয়াল, গভীর নলকূপসহ  স্থানীয় ফান্ড ব্যবহার করে দালাল বাজার, চরশাহী ও শাকচর ইউনিয়নের প্রকল্প এলাকায় উপকারভোগীদের ব্যবহারের জন্য ঘাটলা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে শিশুদের জন্য খেলনা, দোলনা সহ আনুষাঙ্গিক কাজ করা হবে। এ কাজে আমি সহ সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকবৃন্দ এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ নিয়মিতভাবে এ প্রকল্প এলাকাসহ অন্যান্য প্রকল্প এলাকাগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। জেলায় নির্মিত বা নির্মাণাধীন গৃহসমূহের মধ্যে কোন ধরনের অনিয়ম, ত্রুটি, বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হয়নি বলে জানান তিনি।

 

যাযাদি/এসএইচ