​আলোচিত শিকলে বন্দি রবিউলের পাশে ইউএনও

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২১, ১০:৪৯

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

 

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রবিউল ইসলাম (২৮)  নামে এক যুবক দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি। বোয়ালমারী পৌরসভার ছোলনা গ্রামের তরুন সমাজ সেবক মো. হেদায়েতুর রাফি ওরফে সুমন রাফি উপজেলার অসহায় ও দরিদ্রদের খাদ্য, অর্থ ও চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সাহায্য করে আসছেন। এই সুমন রাফিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রবিউলকে নিয়ে প্রথম একটি স্ট্যাটাস দেন। এরপর যায়যায়দিনসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে রবিউলকে নিয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

 

এক পর্যায়ে শুক্রবার (৩০ জুলাই) বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ রবিউলের বাড়ি গিয়ে তার বাবার হাতে রবিউলের চিকিৎসাবাবদ প্রাথমিকভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৫ হাজার টাকা এবং খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন। এ সময় ইউএনও ঝোটন চন্দের সঙ্গে ছিলেন উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাসামদিয়ায় অবস্থিত শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. লিয়াকত হোসেন লিটন।

 

অধ্যক্ষ লিটন যায়যায়দিনকে জানান, রবিউলের থাকার ঘর জরাজীর্ণ এবং ঘরের মেঝের একটি মাটির গর্তে রবিউল থাকে। তার কোমরে সব সময় শিকল বাঁধা থাকে। বিষয়টি দেখে মানবতার ইউএনও ঝোটন চন্দ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি রবিউলের থাকার জন্য আগামী সপ্তাহে একটি ঘর করে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন। অধ্যক্ষ লিটন আরো জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন রবিউলের সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও করবেন ইউএনও।

 

এদিকে 'ক্ষুধার্তের আত্মচিৎকার' নামে একটি ভার্চুয়াল গ্রুপের এডমিন মোহাম্মদ শামীম প্রধান যায়যায়দিনকে জানান, রবিউলের থাকার জন্য একটি ঘর এবং চিকিৎসার জন্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন জন ২১ হাজার টাকা দিয়েছে। মোহাম্মদ শামীম প্রধান এবং সুমন রাফি আগে থেকেই রবিউলের চিকিৎসা এবং তার থাকার জন্য একটি ভালো ঘরের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।

 

এলাকায় মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত সুমন রাফি ঈদের আগে রবিউলকে দেখতে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী, ফলমূল এবং নগদ টাকা দিয়েছিলেন। সুমন রাফিও তার সুচিকিৎসার জন্য চেষ্টা করবেন বলে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, রবিউলের উন্নত চিকিৎসা দেয়া বা পাবনা মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

 

যাযাদি/এসএইচ