হরিরামপুরে লকডাউন অমান্য করে আবারো বসলো সাপ্তাহিক হাট

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২১, ১৬:২৮

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে করোনার সংক্রমণরোধে চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যেও বসেছে ঝিটকার হাট। হাটে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও চরাঞ্চল হতে কয়েক হাজার মানুষের আগমন ঘটেছে। হাটে মানা হচ্ছে না কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি, অনেকের মুখে নেই মাস্ক। ফলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণ।

 

লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে শনিবার (৩১জুলাই) সকাল থেকেই  বসছে হাট। এতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটেছে এই হাটে।

 

মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন অফিসের সূত্রমতে, গত ৭দিনে হরিরামপুর উপজেলায় নতুন করে করোনা শনাক্ত ১০৭ জনের। এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪২৯ জনের। এমতাবস্থায় হাট বসায় করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশংকা করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

 

তাদেরই একজন পাটগ্রাম অনাথবন্ধু সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো.ওয়াহিদুর রহমান জানান, 'গর্ভমেন্ট লকডাউন দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। এখানে প্রশাসনের যারা এটাকে বাস্তবায়ন করবে। তাদের উচিৎ এই বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে সংক্রমণ ঠেকানোর।' এছাড়া ভারতে যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছিল। সেটাকে শুধুমাত্র লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধির মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

তাই তিনিও মনে করেন হাটে লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার'।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, হাটে গাদাগাদি করে ছিলো ক্রেতা-বিক্রেতার অবস্থান। অধিকাংশ মানুষের মুখেই ছিলো না মাস্ক। আবার কারো কারো মাস্ক ছিলো  থুতনিতে ও পকেটে। এতে বলার অপেক্ষা রাখেনা যে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। এছাড়া হাট উপলক্ষ্যে ঝিটকা বাজারের মার্কেট সহ প্রায় সকল দোকানই ছিলো খোলা।

 

উপজেলার গালা ইউনিয়নের ঝিটকা মধ্যপাড়া থেকে আসা হাটে ফল বিক্রেতা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মাস্ক তো ভুলে রাইখা আসছি। এছাড়া হাটে ডিটারজেন্ট বিক্রি করতে আসা তুহিন জানান, মাস্ক আছে পকেটে। লোকজন ডেকে ডেকে ডিটারজেন্ট বিক্রি করতে হয় বলে মাস্ক পড়িনি।

 

পার্শবর্তী রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলা থেকে ঝিটকা হাটে আসা আব্দুর রাজ্জাক ও রহিম খান বলেন,  বাজার করার দরকার, তাই আসছি। মাস্ক পড়েননি কেনো জিগ্যেস করলে একজন পকেট থেকে মাস্ক বের করে পড়লেও অপরজন জানান, হাট করা শেষ এখন চলে যামু তাই মাস্ক কিনি নাই।

 

উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চল সেলিমপুর, লেছড়াগঞ্জ, নটাখোলা, হরিহরদিয়া, হালুয়াঘাট থেকে অন্তত ছোট বড় অন্তত ৩০ টি ট্রলার যাত্রীভর্তি করে হাটে এসেছে। প্রতিটি ট্রলারে ১০০-২০০জন মানুষ এসেছে বলে জানান ট্রলার চালকেরা।

 

এমন একটি ট্রলারে সেলিমপুর চর থেকে হাটে এসেছেন মো. জুয়েল ও রাজা তাদের লকডাউনে হাটে আসার কথা জিজ্ঞেস করলে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

 

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, আমি একটু আগে শুনেছি হাটের অবস্থা নাকি ভয়াবহ। আমি দেখছি কি করা যায়।

 

উল্লেখ্য: এর আগে গত ৩জুলাই "হরিরামপুরে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত" শিরোনামে দৈনিক যায়যায়দিন এ সংবাদ প্রকাশ হলে, হাটটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

 

যাযাদি/এস