শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনার মার্কেট ও শপিংমল ব্যবসায়ীরা মহা সংকটাপন্ন অবস্থায়

খুলনা অফিস
  ০৪ আগস্ট ২০২১, ১২:০৯
আপডেট  : ০৪ আগস্ট ২০২১, ১২:১০

খুলনায় দিন দিন রুগ্ন হচ্ছে সকল ধরণের ব্যবসা। কারণ প্রায় দেড় বছর যাবৎ করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে সরকারের পক্ষ থেকে লকডাউন ও বিধিনিষেধের আওতায় আমরা খুলনার সাধারণ ব্যবসায়ীরা। গত বছর ২৫ মার্চ থেকে টানা চার মাস যাবৎ সকল ধরনের মার্কেট ও শপিংমলের ব্যবসা বন্ধ থাকার কারণে পুঁজি হারিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে বাধ্য হয়ে শহর ছেড়ে গ্রামে যেতে বাধ্য হয়েছে স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা।

খুলনা ব্যবসায়ী বণিক সমতির কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান, আমাদের খুলনায় এক সময় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু থাকার কারণে খুলনা শহরকে শিল্পনগরী হিসাবে সমগ্র বাংলাদেশের কাছে পরিচিত ছিল।

কিন্তু বর্তমানে আমাদের সেই ঐতিহ্যবাহী শিল্প গুলো একে একে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে শ্রীবৃদ্ধি হারিয়ে যেতে বসেছে শিল্পনগরী খুলনা শহরের।

পাশাপাশি মোহিদুল ইসলাম আরও বলেন, গত টানা চার মাস মহামারী করোনার প্রথম ঢেঁউয়ে নগরীর সকল মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের যে পরিমানে ক্ষতি হয়েছিল। সেই ক্ষতি সামাল দিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও প্রাণ ঘাতক করোনা হঠাৎ করে সংক্রামণ অস্বাভাবিক আকারে ধারণ করার কারণে ব্যবসায়ীদের আবারও পরতে হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধের আওতায়। কিন্তু সরকার সাধারণ ব্যবসায়ীদের জন্য স্বল্প সুদে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ প্রণোদনার কথা ঘোষণা দিলেও বাস্তবিক দিক থেকে ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলোর নিয়ম ঠিক অন্যরকম কঠিন অবস্থানে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিকট সরকারে ঘোষণা মোতাবেক ব্যবসায়ী ঋণের জন্য আবেদন করতের গেলে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভাষ্য তার ঠিক বিপরীত। তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে জামানত হিসেবে জমির দলিল ব্যাংকের নিকট পাওয়ার অব এ্যাটর্নি করে দিতে হবে।

তাছাড়া আরও অনেক শর্তসাপেক্ষের মাধ্যমে ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে। তাতে করেও সাধারণ ব্যবসায়ীরা সরকার ঘোষিত প্রণোদনার আওতার বাইরে থেকে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে।

নগরীর খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার শুধুমাত্র আমাদের মার্কেট ও শপিংমল গুলোর উপর কঠোর বিধিনিষেধ করাকরিভাবে পর্যবেক্ষণ করলেও সাধারণ মানুষদের কোন ক্রমে ঘরমুখি করে রাখতে পারছে না। প্রশাসনের কঠোর নজরদারী থাকা সত্তেও শহর জুঁড়ে রিকশা, ইজিবাই, মটরসাইকেল ও জন চলাচল সার্বক্ষণিকভাবে অস্বাভাবিক চিত্র। আমাদের শহর কেন্দ্রি সকল মার্কেট ও শপিংমল গুলো বন্ধ থাকলেও পাড়া মহল্লার মুদিদোকান, খাবারের দোকানসহ হোটেল রেস্টুরেন্ট গুলি সরকারি বিধিনিষেধকে অমান্য করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত খোলা রাখছে। তাতে করে প্রতিদিন বিকাল থেকেই এলাকা গুলোতে শুরু হয় জনসমাগম ওইসব এলাকার কোথাও কোনো স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। সে ক্ষেত্রে আমাদের মার্কেট ও শপিংমল ঘুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণের ব্যবস্থা রয়েছে। তবুও আমরা যারা বিশাল অংকের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন। পাশাপাশি আমাদের প্রতিটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কম করে হলেও দুই চারজন করে শ্রমিক কর্মচারি আছে। তাদেরকেও মাস গেলে আসল চালান থেকে বেতন দিয়ে চালিয়ে নিতে হচ্ছে। কারণ প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকরাতো আমাদেরই মুখাপেক্ষিক হয়ে থাকে। তাদেরও সংসার পরিবার আছে।

তবে সমষ্টি দিক থেকে বিবেচনা করে দেখলে কেবল মাত্র আমরা মার্কেট ও শপিং মলের দোকান মালিকরা চরমভারে আর্থিক ক্ষতির মধ্যে দিন দিন নিমজ্জিত হচ্ছি। সরকার আগামী ৫ তারিখের পরে আবারও চলমান বিধি নিষেধের সময় সীমা বাড়িয়েছে। তাতে করে আমরা ব্যবসায়ীরা পড়েছি অনিশ্চিত হতাশার মধ্যে। তিনি গণমাধ্যম কর্র্মীদের আরও বলেন, সবকিছুই যখন স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের মার্কেট ও শপিংল গুলোতে খুলনা জেলা প্রশাসক যদি মানবীক দৃষ্টির দিক থেকে বিবেচনা করে সময় নির্ধারণ করে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ করে দিতেন। তাহলে সাময়িক সময়ের জন্য আমরা কিছুটা হলেও আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হতে পারতাম বলে মার্কেট কর্তৃপক্ষ মত প্রকাশ করেন।

যাযাদি/ এমডি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে