​ঘোড়াঘাটে শারিরীক প্রতিবন্ধী ৩ সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন রেজিয়া

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৩৬

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

 

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মানুষের বাড়িতে কাজ করে ৩ জন শারিরীক প্রতিবন্ধী সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন এক অসহায় বিধবা রেজিয়া বেগম। শারিরীক প্রতিবন্ধী দুই ছেলে আলমগীর ও মহাসিন এবং বড় মেয়ে শাহারার প্রতিবন্ধী ভাতার সামান্য কিছু টাকা ও মানুষের বাড়িতে কাজ করে যা পায় তা দিয়ে সংসার চলে রেজিয়ার। অচেনা জটিল রোগে আক্রান্ত সন্তানদের চিকিৎসা ও খাবারের অভাবে মানবেতর জীবর-যাপন করছেন রেজিয়া বেগমের পরিবারটি। তাই রেজিয়া বেগম সরকারি বেসরকারী ভাবে সকলেই কাছে আর্থিক সাহায্য ও সহযোগীতা চেয়েছেন।

 

রেজিয়া বেগম ঘোড়াঘাট উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের স্ত্রী। ৩০ বছর পূর্বে ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে মারা যান আলতাফ হোসেন। স্বামী মৃত্যুর পর রেজিয়া বেগম ৪ সন্তানকে নিয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে বহু কষ্টে লালন-পালন করেন। বড় মেয়ে শাহারা কে ১৪ বছর বয়সে একই উপজেলার আব্দুল্যা পাড়া (শিবপুর) গ্রামে বিয়ে দেন।

 

প্রায় ১৮ বছর বয়সের মধ্যে ৩ সন্তান জন্ম হলে শাহারা বেগম অচেনা জটির রোগে আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে শাহারা বেগম শারিরীক ভাবে পঙ্গু হলে তার স্বামী তাকে তালাক দেয়। এরপর মা রেজিয়া বেগমের বাড়িতে চলে আসে। বড় ছেলে আলমগীর ও ছোট ছেলে মহসিন ছোট বেলা থেকেই অচেনা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে শারিরীকভাবে পঙ্গু হয়ে পরে। মেঝ মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের বিয়ে হয় একই গ্রামে। সে ১ সন্তানেরা জননী। বর্তমান শারিরীক প্রতিবন্ধী শাহারার বয়স (৪০) আলমগীর (২৮) ও মহসিনের (২৬)।

 

শারিরীক প্রতিবন্ধী মহসিন বলেন,“তার চলাচলের জন্য চার্জার চালিত একটি হুইল চেয়ার ও জীবিকা নির্বাহের জন্য ব্যবসা করতে চাই। কিন্তু আমার কাছে কোন অর্থ নেই”।

 

রেজিয়া বেগম বলেন, “আমার স্বামী মৃতুর পর থেকে আমি মানুষের বাড়ীতে কাজ কর্ম করে পঙ্গু ৩ সন্তানকে নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে জীবন-যাপন করছি। আমার স্বামীর কিছু জমি রেখে গিয়েছিলেন। তাও বিক্রি করে সন্তানদের লালন-পালন করছি। এখন বাড়ীর ৬ শতক জমি ছাড়া আর কিছুই নাই”। তিনি আরো বলেন, “প্রতিবন্ধী সন্তানদের ভাতার টাকা ও আমার কাজের টাকা দিয়ে এখন আর সংসার চলেনা। সন্তানদের চিকিৎসা করাব কি দিয়ে”।

 

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল আউয়াল জানান, “রেজিয়া বেগমের শারিরীক প্রতিবন্ধী সন্তানদের ভাতার আওতার আনা হয়েছে। এ বছর তাকে বিধবা ভাতা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে”।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাফিউল আলম জানান,“একই পরিবারের ৩ জন শারিরীক প্রতিবন্ধী যা সত্যিই দুঃখ জনক। ইতিমধ্যে তিন ভাই বোনকে প্রতিবন্ধী ভাতা-র আওতায় আনা হয়েছে। এই অসহায় পরিবারটিকে কিভাবে সাহায্য ও সহযোগীতা করা যায় খোজ খবর নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।

 

যাযাদি/ এস