​করোনা রোগির চিকিৎসা সেবা নিয়ে পাশে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১:১৬

আবু সালেহ মো. মুসা, ময়মনসিংহ

 

 

জাতীয় দুর্যোগ কিংবা মানুষের বিপদে-আপদে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে এগিয়ে আসা রাজনৈতিক নেতাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। সেবা রাজনীতির অন্যতম পূর্বশর্তও বটে। আর জনপ্রতিনিধিরা তো সেবার অঙ্গীকার দিয়েই ভোটের মাঠে লড়তে নামেন। তবে সমকালীন বাস্তবতা হয়তো কিছুটা ভিন্নতর। বিপদে সেবার হাত সম্প্রসারিত করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লোকের সংখ্যা ক্রমাগত কমের দিকে। সেখানে অনেকটাই ব্যতিক্রমী হিসেবে করোনার দুঃসময়ে সেবার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কেএম খালিদ বাবু এমপি।

 

তিনি বৈশ্বিক মহামারী করোনার দুর্যোগ মুহুর্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের করোনা রোগীদের জরুরি চিকিৎসা সেবার সুবিধার্থে নিয়মিত অক্সিজেনের যোগান দিয়ে যাচ্ছেন। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অর্থায়নে গত সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এই হাসপাতালে ১০ হাজার ১৭৬ সিলিন্ডার অক্সিজেন প্রদান করেছেন এই জনপ্রতিনিধি। প্রতিদিনই রোগিদের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তিনি।

 

 করোনা আক্রান্ত হয়ে মমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হওয়া রোগিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে চিকিৎসক সংকট দেখা দেয়। তখন হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলে প্রতিমন্ত্রী আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ১২জন চিকিৎসক নিয়োগের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের সম্মানীভাতা বাবদ প্রতি মাসে ৪ লক্ষ টাকা হারে বিশেষ অনুদান দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপির পক্ষ থেকে অনুদানের প্রথম কিস্তির চেক গত ১৯ জুলাই হাসপাতালটির পরিচালকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থও প্রদান করা হয়েছে। করোনার মহামারী শেষ না পর্যন্ত অর্থাৎ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগি ভর্তি হবার অবস্থা থাকা পর্যন্ত তিনি চিকিৎসক ও অক্সিজেন সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন বলে জানিয়েছেন। নিয়মিত সরবরাহের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলের কাজ চলমান রয়েছে। তার সেবা কার্যক্রমকে সমকালীন দৃষ্টান্ত হিসেবেই দেখছেন সুধী সমাজ। তার কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত হয়ে ইতোমধ্যে জেলার অনেকেই তাদের সেবার হাত সম্প্রসারিত করে অক্সিজেন সিলিন্টার প্রদানসহ নানা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়েছেন।

 

মমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে অক্সিজেন সেবা পেয়েছেন এমন কয়েকজন রোগির স্বজন জানিয়েছেন, ‘শুনেছি সংস্কৃতিপ্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি সব রোগিদের জন্য অক্সিজেন পাবার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমরা উনার বদৌলতে এমন সুবিধা পেয়ে খুবই খুশি। তারা এজন্য প্রতিমন্ত্রীর জন্য দোয় করেছেন। পাশাপাশি অন্যান্যদেরকেও এমন মানব সেবায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।’

 

নান্দাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে করোনা আক্রান্ত রোগি নিয়ে আসা হাবিবুর রহমান নামের এক রোগির স্বজন বলেন, সময় মত অক্সিজেন না পেলে রোগি বাঁচানো কঠিন হয়ে যেত। প্রতিমন্ত্রী অক্সিজেন প্রদান করেছেন শুনে তিনি তার প্রতি কৃজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, উনাদের মত জনপ্রতিনিধি দেশে অনেক দরকার।’

 

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সাল রাব্বী তানিম জানান, প্রতিমন্ত্রী একজন মাঠের রাজনীতিবিদ হিসেবে সব সময়ই মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহ রাখেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি করোনাকালীন নানা সহযোগিতার পাশাপাশি মমেক হাসপাতালে এ ধরণের সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন।

 

এদিকে প্রতিমন্ত্রীর এই মানবিক সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, দেশের মানুষের চরম দুঃসময়ে মানুষকে বাঁচানোর এই প্রচেষ্টা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

 

মমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ ফজলুল কবীর বলেছেন, করোনার রোগিদের অব্যাহত চাপ চলাকালীন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কেএম খালিদ এমপি হাসপাতালে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। উনার এই এগিয়ে আসা খুবই পজেটিভ। এভাবে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে চিকিৎসকরা সাহস পান। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা প্রদানেও সুবিধা হয়। তিনি এই মানবিক সহযোগিতার জন্য প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি সমাজের নানা শ্রেণি পেশার সামর্থবান মানুষদেরকে সকল দুঃসময়ে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

 

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কেএম খালিদ এমপি বলেছেন, ‘ আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেবার মানসিকতা নিয়ে রাজনীতি করি। দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা একজন রাজনীতিবিদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর কন্যা আমাদেরকে তেমন শিক্ষাই দিয়েছেন। সেই দায়িত্ব এবং কর্তব্যবোধ থেকেই মূলত করোনার মহামারির কালে মানুষের পাশে থাকবার চেষ্টা করেছি। নিজ এলাকায় করোনা প্রতিরোধ এবং করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থেকে নানা কাজ করার পাশাপাশি মমেক হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জীবন রক্ষার অক্সিজেন সেবা প্রদানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ সেবা কার্যক্রম করোনার প্রকোপ যতদিন থাকবে ততদিনই চালু রাখা হবে। এছাড়া মানুষের যেকোন দুঃসময়ে সব সময়ই সেবার মানসিকতা নিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’ তিনি সকলকেই মানুষের সেবায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।

 

যাযাদি/ এস