বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আঙ্গুলের সাদৃশ্যকে ঘিরে গড়ে ওঠা ভন্ডদের আস্তানা ভেঙ্গে দিল প্রশাসন

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:৩৫

শেরপুরের নকলায় হাতের আঙ্গুলে সাদৃশ্যকে ঘিরে গড়ে ওঠা ভন্ডদের আস্তানা ভেঙ্গে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান ওই আস্তানা ভেঙ্গে দেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গনপদ্দি ইউনিয়নের খারজান মধ্যপাড়া এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে উপজেলার গনপদ্দী ইউনিয়নের খারজান মধ্যপাড়া এলাকার মো. রবিন মিয়ার পুরাতান একটি ইউকিলিপটার্স গাছের গুড়ায় মানুষের একটি হাতের মত একটা কিছু দেখতে পান ওই গ্রামের সাবিনা নামের একটি মেয়ে। পরে বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনদের বলে। মূহুর্তের মধ্যেই বিষয়টি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। অপ্রপ্রচার শুরু হয় গাছের গুড়িতে হঠাৎ মানুষের হাত গজিয়ে উঠেছে। সেই হাতের আঙ্গুলগুলোকে দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শুরু করে মানুষ। শতশত মানুষ ভিড় জমায় সেই হাতের আঙ্গুলটিকে এক নজর দেখতে।

এসুযোগে স্থানীয় এক ভন্ড তার গায়ে ও মাথায় লাল সালু জড়িয়ে গাছের গুড়ির আশেপাশে আগরবাতি, মোমবাতি জ্বালিয়ে আস্তানা গড়ে তুলেন। লোকজনকে ওই বস্তুটি ধরতে মানা করা হয়। বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়া হয় এর চারপাশ। তাছাড়া সাজানো হয় গাছের আশপাশ। ভন্ডদের এমন এমন দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ আবার মানত ও নজরনা হিসেবে টাকা দেওয়া শুরু করে। ভন্ডরা বলতে শুরু করে বস্তটি ধরলে নাক ও মুখে রক্ত আসা শুরু করবে এবং দেখলে টাকা দিতে হবে। তানা হলে বাড়িতে যাওয়ার পরেই সমস্যা হবে। অনেকেই ভয়ে টাকা দিতে শুরু করে। দূরদূরান্ত থেকে আসা শুরু করে লোকজন বিষয়টি একনজর দেখার জন্য।

বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ, উপজেলা বন কর্মকর্তা ওয়ালিদ বিন মতিন, গনপদ্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুর রহমান আবুলসহ পুলিশ বিভাগের সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ ও বন কর্মকর্তা ওয়ালিদ বিন মতিন নিশ্চিত করেন যে, এটি এক প্রকারের ছত্রাক। অলৌকিক কিছু না।

পরে ইউএনও জাহিদুর রহমান মাইকের মাধ্যমে স্থানীয়দের বুঝান যে, এর কোন অলৌকিকতা নেই, এটি এক প্রকার ছত্রাক মাত্র। তার কথা সকলেই বুঝতে পারেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ওই ছত্রাকটি উপড়ে ফেলাসহ ভন্ডদের আস্তানা ভেঙ্গে দেওয়া হয়।

যাযাদি/ এমডি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে