টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী মোস্তফা বয়াতি অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন না

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:৫৯

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের গঁনেরগাও গ্রামের জনপ্রিয় বাউল শিল্পী মোস্তফা বয়াতি ২০০৬ সনে বাংলাদেশ টেলিভিশনের পল্লী গান এর নিয়মিত শিল্পী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, নরসিংদী, হবিগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় বাউল শিল্পীদের অন্যতম ছিলেন। ২০০৯ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি আর গান গাইতে পারছেন না।  অর্থের অভাবে সুচিকিৎসাও বন্ধ। গানই ছিল তার একমাত্র উপার্জনের পথ। বর্তমানে গান গাইতে না পেরে পরিবার ও ছেলের লেখা পড়ার খরচ চালাতে পারছেন না। 

 

জানাযায়, ওস্তাদ লাল মিয়ার বয়াতির আশ্রয়ে থেকে গানের প্রথম তালিম নিয়ে কিশোরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সর্বত্র বাউল ও পালা গানের জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বাউল গান করেছিলেন। তার গাওয়া ৩৫টি  ক্যাসেট বাজারে বের হয়েছে।২০০৬ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গীত শিল্পী চুড়ান্ত নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে “পল্লী” গানের নিয়মিত শিল্পী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৯ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তিনি  কর্নেল (অব.) জিহাদ খান এর কাছে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুয়ায়ী জোরে কথা বলা ও গান গাওয়া নিষেধ। প্রতি মাসে তার ৩ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। ভিটেবাড়ী ছাড়া তার কোন ফসলী জমি নেই। গান গেয়ে জমানো কিছু টাকা ও সামান্য ফসলী জমি বিক্রি করে  চিকিৎসার পিছনে ব্যায় করে ফেলেছেন। বর্তমানে চিকিৎসা, সংসার চালানো ও ছেলের লেখাপড়ার খরছ চালানো তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।  তিনি সরকার ও সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

 

বয়াতীর পিতা মেনু মিয়া ও মাতা সুফিয়া খাতুন জানান আমাদের ছেলে মোস্তুফা সে ছোট বেলা থেকে বাউল গানের প্রতি নেশা। ওস্তাদ  লাল মিয়ার বয়াতীর হাত ধরে বাউল শিল্পী হয়েছেন। এখন ছেলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায আর গান গাইতে পারে না। আমাদেরও বয়স হয়েগেছে কাজ কামও করতে পারি না। চোখের সামনে ছেলের কষ্ট সহ্য করেতে পারছি না।  মোস্তুফা বাড়িতে কয়েক জন ছেলে মেয়েদের কে গান শিখায়, এই সামান্য টাকা দিয়ে কোন রকম দিনাপাত করছি।

 

হৃদরোগে আক্রান্ত বাউল শিল্পী মোস্তফা বয়াতি জানান ২০০৯ সনে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমি আর গান গাইতে পারি না। গানই আমার এক মাত্র সম্পদ ছিল । আমার সমান্য যা ছিল সব আমার চিকিৎসার পিছনে খরচ করেফেলেছি। এখন আমার মা, বাবা, স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে কষ্টে দিন পার করছি।  আমার চিকিৎসার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতা চাই।

 

যাযাদি/ এস