শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

​স্বপ্নের পায়রা সেতুর দ্বার খুলছে ২৪ অক্টোবর

বরিশাল অফিস
  ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৭:৩০

ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে পটুয়াখালীর পায়রা নদীতে নবনির্মিত ‘পায়রা সেতু’র দ্বার খুলছে আগামী ২৪ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুটি উদ্বোধন করবেন। এরপরই সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল হামিদ। এ সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত পৌঁছাতে আপাতত পদ্মা নদীর মাওয়া ফেরী ছাড়া আর কোনো ফেরী থাকবে না। আর পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত স্থাপিত হবে সড়ক যোগাযোগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা ও পটুয়াখালির সীমান্তে পায়রা নদীর উপর স্বপ্নের পায়রা সেতুর নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। নদীর মধ্যে মাত্র একটি পিলারসহ মোট ৩টি পিলারের ওপর ১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুটি দাড়িয়ে আছে। সেতুটির দুই দফা ব্যয় বৃদ্ধির পর সর্বশেষ নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ২৭৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এ সেতু নির্মান শতভাগই সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটিতে যান চলাচল শুরু হলে দক্ষিনাঞ্চলের বানিজ্যিক, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিস্টরা। বরিশাল চেম্বার অব কমার্স’র সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, পায়রায় যান চলাচল শুরু হলে এ অঞ্চলের বানিজ্যিক সেক্টরে প্রসার ঘটবে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা আর সমুদ্র বন্দর ঘিরে বিনিয়োগও বাড়বে।

পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো: আব্দুল হালিম জানান, সেতুটির উদ্বোধনের জন্য তারা প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৪ অক্টোবর সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধন করবেন। এটি দেশের দ্বিতীয় সেতু, যা এক্সট্র্রা ডোজ ক্যাবল সিস্টেমে তৈরি। সেতুতে হেল্প মনিটরিং সিস্টেম থাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা ওভার লোডেড যানবাহনে ক্ষতি এড়াতে পূর্বভাস দিবে। প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৬ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এর নির্মাণ শুরু করে। সেতুটির দুইপাশ এক্সট্রা ডোজ ক্যাবল দিয়ে সংযুক্ত করায় নদীর অংশে মাত্র একটি পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। নদীর মুল অংশে ৬৩০ মিটার বক্স গার্ডার ও চারটি স্প্যানের ওপর এটি নির্মিত হয়েছে। পায়রা সমুদ্রবন্দরে উপকূলীয় পণ্য ও জ্বালানিবাহী নৌযান চলাচলের জন্য মূল অংশে দুটি স্প্যান ১৮.৩০ মিটার ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স রাখা হয়েছে। নদীর তলদেশে বসানো হয়েছে সর্ববৃহৎ ১৩০ মিটার দীর্ঘ পাইল। মোট ৩২টি স্প্যানের মূল সেতুটি বিভিন্ন মাপের ৫৫টি টেস্ট পাইলসহ দশটি পিয়ার ক্যাপের ওপর নির্মিত হয়েছে। এছাড়া ১৬৭টি বক্স গার্ডার সেগমেন্ট রয়েছে এটিতে। যার ফলে দূর থেকে সেতুটিকে মনে হবে ঝুলে আছে। জোয়ারের সময় নদী থেকে সেতুটি ১৮.৩০ মিটার উঁচুতে থাকবে। চার লেনবিশিষ্ট সেতুটির নদীর উভয় প্রান্তে মোট ১ হাজার ২৬৮ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল বলেন, পায়রা সেতুটি অত্যন্ত নান্দনিক ও শৈল্পিকভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। এমন নিরবিচ্ছিন্ন যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে