শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চকরিয়ায় নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৯ চেয়ারম্যান প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ

মুহাম্মদ মনজুর আলম, চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  ২৪ অক্টোবর ২০২১, ২০:০০

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ৩৯ চেয়ারম্যান প্রার্থী। তারা নৌকার মনোনয়ন নিশ্চিত করতে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। আজ ২৪ অক্টোবর চকরিয়ার ১০টি ইউনিয়নের নৌকার মনোনীতদের নাম ঘোষণা করার কথা রয়েছে। ১৭ অক্টোবর ১০টি ইউনিয়নের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

এদিকে চকরিয়ায় আলোচিত হচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম। পোস্টারে, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে এলাকা। চলছে প্রার্থীদের চুলচেরা বিশ্লেষণ। কে এলাকার উন্নয়ন করেছে, কে করতে পারবে না। আবার কে দলের মনোনীত প্রার্থী হচ্ছেন বা বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন কোন কোন নেতা। রাজনৈতিক দলের ‘গ্রুপ রাজনীতিতেও’ প্রভাব ফেলছে ভোটারদের নানা রকম ভোটের হিসাবনিকাশ। এমনকি প্রার্থীদের পূর্বপুরুষের কর্মকাণ্ডও আলোচনায় চলে আসছে এখন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ জানায়, প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে ৪-৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন চাইলেও একমাত্র কৈয়ারবিল ইউনিয়নে নৌকার জন্য মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন দুজন। তারা হলেনÑ আফজালুর রহমান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক জন্নাতুল বকেয়া রেখা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে কৈয়ারবিলে নৌকার প্রার্থী ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ চৌধুরী। কিন্তু তিনি এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না।

কৈয়ারবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান হানু এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আফজালুর রহমান চৌধুরীকে সমর্থন দিয়েছেন বলে এলাকায় শোনা যাচ্ছে।

নির্বাচন অফিস জানায়, অগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় দফায় চকরিয়ার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চকরিয়া উপজেলার ইউনিয়নগুলো হলো, বদরখালী, কোনাখালী, পশ্চিমবড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, বিএমচর, সাহারবিল, পূর্ববড়ভেওলা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল ও কাকারা।

এদিকে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য প্রতি ইউনিয়ন থেকে তিনজন করে নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্য থেকে কেন্দ্রের মনোনয়ন বোর্ড দলীয়ভাবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিবে একজনকে। আর এবারের নির্বাচনে একের পর এক চমক দেখাচ্ছে সরকারি দল। তৃণমূল পর্যায়ে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শেষ করে তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়েছে দলটির নেতৃবৃন্দ।

অন্যতম বিরোধী দল বিএনপির দলীয় প্রার্থী না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরই আগের চেয়ে সতর্কভাবে এবারের প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

আগামী ২৮ অক্টোবর চকরিয়া উপজেলার বদরখালীতে নুরে হোছাইন আরিফ, একে ভুট্টো সিকদার, দেলোওয়ার হোছাইন, শেখ সালাহউদ্দিন ও হামিদউল্লাহ। পশ্চিম বড়ভেওলায় সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা, রবিউল এহেছান লিটন, ডা. গিয়াস উদ্দিন, নিয়ামত উল্লাহ মনু ও কাইছারুল বাচ্চু। ঢেমুশিয়ায় মঈনউদ্দিন চৌধুরী, জাহানারা পারভীন, মমতাজ বেগম, আমির হোসেন হাজারী, মোহাম্মদ হোসেন ও আসফি চৌধুরী। কোনাখালীতে দিদারুল হক সিকদার, জাফর আলম ছিদ্দিকী, সোলতান মাহমুদ টিপু ও মনছুর আলম। বিএমচরে বদিউল আলম, তোফায়েল আহমদ ও শহীদুল ইসলাম খোকন। পূর্ববড় ভেওলায় খলিল উল্লাহ চৌধুরী, ফারহানা আফরিন মুন্না, ইব্রাহিম খলিল ও কামরুজ্জামান সোহেল। সাহারবিলে মহসিন বাবুল, সরওয়ার আলম ও মোজাহের আহমদ। কাকারায় শওকত ওসমান, সাহাব উদ্দিন ও ইছমত আলী। কৈয়ারবিলে আফজালুর রহমান ও জন্নাতুল বকেয়া রেখা। লক্ষ্যারচরে রেজাউল করিম সেলিম, আওরঙ্গজেব বুলেট, সাইকুল ইসলাম, এমএ রাশেদ ও মহিউদ্দিন মোমেন।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কিছু প্রার্থী নিজেকে জনপ্রিয় মনে করে নৌকার বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে। এতে দলীয় কোন্দল দূর করা যায় না। সাংগঠনিক দুর্বলতা দেখা দেয়। তৃণমূলের রাজনীতিতে ঐক্য ধরে রাখতে আমরা যাকে যোগ্য মনে করব তাকেই মনোনয়ন দেব। মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে একবার বিদ্রোহী প্রার্থী হলে ওই নেতাকে আর কখনই নৌকা প্রতীক দেওয়া হবে না। শুধু তাই নই, ওই বিদ্রোহী প্রার্থীকে আজীবনের জন্য দলীয় পদ থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হবে। তিনি সকল মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দলীয় প্রতীকের পক্ষে কাজ করে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে