​১০০টাকায় মিলল চাকরি : চায়ের দোকানি শিবু লালের পরিবারে খুশির বন্যা

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০২১, ২০:৫০

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

 

 

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা কেশবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা শিবু লাল। বাজারে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দিয়ে তার সংসার পরিচালিত হয়। সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চা বানিয়ে দিন কাটে তার।

 

অসুস্থ শরীরেও কোনো দিন দোকান বন্ধ রাখেনি শিবু লাল। কারণ, চার ছেলেমেয়ের লেখাপড়াসহ সংসারের বোঝা তো শিবু লালের মাথায়। হাটবাজারের দিনগুলোতে শিবু লালের বড় ছেলে অভি লালও তার সঙ্গে দোকানে কাজ করেন। তবে শিবু লালের এখন আর মনঃকষ্ট নেই। কারণ এবার বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি হয়েছে ছেলে অভি লালের। ১শ টাকার ব্যাংক ড্রাফট খরচ করে পুলিশে চাকরি হওয়ায় নতুন করে সোনালি দিনের স্বপ্ন দেখছে অভি লালের পরিবার।

 

এমন নিম্নবিত্ত পরিবারে অরেক কন্যা সুরাইয়া আক্তার রিমু। রিমুর বাবাব গলাচিপা শহরে কাঁচামালের ব্যবসা করেন। এবার পুলিশের কনস্টেবল পদে রিমুর চাকরি হওয়ায় দরিদ্র পরিবারটি এখন আলোর মুখ দেখছে। তাইতো রিমুর মুখে এখন হাসির কোনো শেষ নেই।

 

পটুয়াখালীতে প্রথমবাবের মতো শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে শারীরিক যোগ্যতা সম্পন্ন এবং মেধাবীদের পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এবারে পটুয়াখালীতে যে ৩২ জন পুলিশ সদস্য নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই নিম্নমধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র পরিবারের সন্তান। নিজেদের যোগ্যতা এবং মেধায় চাকরি পেয়ে খুশি তারা।

 

পটুয়াখালী জেলা পুলিশের তথ্য অনুয়ারী এবার যে ৩২ জন চাকরি পেয়েছেন তাদের মধ্যে কৃষক পরিবারের ৭ জন, দিনমজুর পরিবারের ৩ জন, চায়ের দোকানি ১ জন, মসজিদের ইমামের একজন ছেলের চাকরি হয়েছে। এ বছরের নিযোগে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে। যে কারণে মেধাবী এবং শারীরিক যোগ্যতা সম্পন্ন ছেলেমেয়েরা নিয়োগ পেয়েছেন। তাইতো রিকশা চালক, রংমিস্ত্রি কিংবা দিনমজুরের মতো কাজ করেও ছেলের সাফল্যে এসব পরিবারের সদস্যরা খুশি।

 

চায়ের দোকানি শিবু লাল বলেন, ‘অভাবের সংসারে ছেলের চাকরি হওয়ায় আমি অনেক বেশি খুশি। ঈশ্বরের কাছে সরকার এবং পুলিশ প্রধানের জন্য দোয়া করি। ঈশ্বর তাদের মঙ্গল করুক।’

 

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, বর্তমান আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ পুলিশের নতুন এই নিয়াগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পটুয়াখালী জেলায় অনলাইনে প্রথমে ৫৪৪৫ জন চাকরি প্রার্থী আবেদন করেন। যাদের মধ্যে ১২৮০ জনের শারীরিক সক্ষমতা যাচাই করে তাদের থেকে ৩২৫ জনের লিখিত পরীক্ষা এবং তা থেকে ৬২ জনের ভাইভা শেষে ৩২ জনকে নিয়োগের জন্য বাছাই করা হয়।

 

‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’Ñ এমন স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিতে এবং আগামী দিনের আধুনিক রাষ্ট্রের পুলিশি ব্যবস্থার কাঠামো তৈরিতেই বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই পদ্ধতি প্রবর্তন বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

 

যাযাদি/ এস