বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাহাড়ে মিষ্টান্ন মাল্টার চাষ ও চাহিদা বাড়ছে

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
  ২৬ নভেম্বর ২০২১, ১২:৩২

বাজারে সাধারণত কমলা বা মাল্টায় বিভিন্ন এলকোহল মিশ্রিত থাকায় ফলের প্রকৃত গুণাগুন বা স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হচ্ছে প্রত্যান্তাঞ্চলের মানুষ। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন্ পাহাড়ে সৃজিত মাল্টার তরতাজা ঘ্রাণ নিতে বাজারে পাহাড়ি মাল্টার চাহিদা যেমন বাড়ছে, তেমনি মাল্টা চাষে স্বাভলম্বীও হচ্ছে চাষিরা। খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে বারি-১ জাতের মাল্টা প্রচার পেয়েছে ‘মিষ্টান্ন মাল্টা’ নামে। সুস্বাদু এই মাল্টা চাষ করছেন উপজেলার অর্ধশত চাষি। পাহাড়ে এই জাতের মাল্টার ফলন ভালো, স্বাদে মিষ্টি হওয়ায় স্থানীয় ও সমতলে এর চাহিদা বাড়ছে। চলতি বছরে জেলার মানিকছড়ি উপজেলায় মাল্টা চাষ হয়েছে ৫৫ হেক্টর জমিতে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য এলাকার পাহাড়ি উর্বর মাটিতে সময়োপযোগী কৃষি উৎপাদনে ঝুঁকছে প্রান্তিক চাষিরা। সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে বারি-১ জাতের মাল্টা চাষে সাফল্য পাওয়া গেছে। পাহাড়ে উৎপাদিত মাল্টা স্বাদে মিষ্টি হওয়ায় বাজারেও চাহিদা বেশি।

কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মানিকছড়িতে মাল্টা চাষ হয়েছে ৩০ হেক্টর জমিতে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ হেক্টর জমি। পরে অর্থবছরে মাল্টার চাষে গুরুত্ব না দেখা গেলেও চলতি বছরে ৫৫ হেক্টর টিলায় মিষ্টান্ন মাল্টা চাষ করেছেন অন্তত অর্ধশত প্রান্তিক ও শৌখিন চাষি। উপজেলার বাটনাতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম মোহন চাষ করেছেন প্রায় ৮০০ বারি-১ মাল্টার চারা। তিনি জানান, ভালো মানের চারা এবং পরিশ্রম করলে মাল্টা চাষে স্বাভলম্বী হওয়া সম্ভব।

লেমুয়া এলাকার প্রান্তিক কৃষক সুদেব বড়ুয়ার মাল্টা বাগানে গিয়ে দেখা, নিজের ৩ একর টিলায় ৩ ধাপে প্রায় ৮০০ মাল্টার চারা রোপণ করেছেন। এর মধ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চারা পেয়েছেন ৩০০টি। গত ২০১৮ সালে লাগানো ১০০ গাছে প্রথম বছর মাল্টা ধরেছিল ৮০ কেজি। এ বছর বিক্রি হয়েছে ৪০০ কেজি। প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে।

কৃষক সুদেব বড়ুয়া জানান, ‘পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষে উপযোগী। মাল্টা গাছে প্রথম ৩-৪ বছর পরিচর্যা, সেবাযত্ন, সার-ওষুধ বেশি বেশি দিলে দ্রুত প্রতিটি গাছ পরিপ‚র্ণ হবে। এতে গাছের ডালে ডালে ফল আসবে। এখানকার মাল্টা খুব মিষ্টান্ন, তাই সমতলের পাইকারের আগ্রহ বেশি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান বলেন, ‘পাহাড়ের মাটি ও পরিবেশ বারি-১ মাল্টার জন্য বেশ উপযোগী। এখানের মাল্টা খুব মিষ্টি হয়। বাজারে ফলের চাহিদা থাকায় দিন দিন মাল্টা চাষে মানুষ ঝুঁকছে। আমরা সাধ্য অনুযায়ী প্রান্তিক কৃষকদের সেবা ও সহযোগিতা দিচ্ছি।’

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে