​ফরিদপুরের হার না মানা একজন সৈয়দ আলী ভূঁইয়া

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:৪৪

ফরিদপুর প্রতিনিধি

 

দরিদ্র পিতা মাতার সংসারে অভাব অনটন থাকায়, লেখাপড়া তেমন করতে পারেনি সৈয়দ আলী। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই সংসারের হাল ধরতে, গ্রামে ঘুরে ঘুরে চুড়ি ফিতা বিক্রি শুরু করেন।  এক পর্যায়ে রংপুর জেলায় চলে যান। তিনি ১৯৭৯ সালে সেখানে আব্দুল মজিদ মিয়া নামে এক কলেজ শিক্ষকের কাছ থেকে কান পরিষ্কারের বিদ্যা শিক্ষা গ্রহন করেন। সেখানে ৩ বছর প্রশিক্ষণ নিয়ে, নিজেই শুরু করেন কান পরিষ্কার করার কাজ। সেই থেকে এ পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন সৈয়দ আলী। প্রায় ২০ বছর ধরে নিজ এলাকায় এসে মানুষের কান পরিষ্কারের কাজ করছেন। 

 

সৈয়দ আলী ভুঁইয়া ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের মাঠবালিয়া গ্রামের মৃত বারেক ভূঁইয়ার ছেলে।

 

প্রায় ৪০ বছর ধরে মানুষের কান পরিষ্কারের কাজ করছেন সৈয়দ আলী ভূঁইয়া। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারে, অফিস-আদালতে ঘুরে, মানুষের কান পরিষ্কার করে যা আয় করেন সেই টাকায় তার সংসার চলে। এটি তার একমাত্র পেশা । 

 

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার সদর বাজারে  সৈয়দ আলী ভূঁইয়ার সাথে সরেজমিনে দেখা ও কথা হলে তিনি জানান, মানুষের কান পরিষ্কার করে, প্রতিদিন তিন থেকে চার শত টাকা আয় করেন। জমির / জায়গার মধ্যে আছে মাত্র আড়াই শতাংশ বাড়ী। সেখানে ছোট একটি দোচালা ঘর রয়েছে। তার চার মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায়, তারা স্বামীর সংসার করছেন। দুই ছেলে বিয়ে করে তাদের নতুন সংসার শুরু করেছেন। কিন্তু বাড়ীতে শুধুমাত্র একটি দোচালা ঘর থাকায়, সেই ঘরেই সবাই মিলে বসবাস করতে হচ্ছে। তার ছোট ছেলে বিপ্লব ভূঁইয়া স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখা পড়া করছে।

 

সৈয়দ আলী দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে আরো জানান , প্রায় ১০ বছর ধরে আমি হার্টের রোগে ভূগছি। মানুষের কান পরিষ্কার করে, যা আয় হয় তা দিয়ে ঠিক মতো সংসারই চালাতে পারিনা। তাই বাধ্য হয়ে ধার দেনা করে নিজের ওষুধ কিনতে হচ্ছে।  আমাকে প্রতিদিন ৫০-৬০ টাকার ওষুধ খেতে হয়। আমি খুবই কষ্টে সংসার চালাচ্ছি  কিন্তু সরকারি ঘর এবং কোনো আর্থিক সহায়তা আমি পাচ্ছিনা। তারপরে ও আমি সততার সাথে এই পেশা চালিয়ে যাচ্ছি।  আমি আপনার মাধ্যমে সকলের দোয়া প্রার্থী ।

 

যাযাদি/এসআই