মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

​​​​​​​ডিমলায় সরিষার বাম্পার ফলন

ডিমলা(নীলফামারী)প্রতিনিধি
  ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:২৪
আপডেট  : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:১২

এখন সরিষা চাষের মৌসুম। সরিষা ক্ষেতের হলুদিয়া প্র্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ভরিয়ে তুলেছে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। এ যেন প্রকৃতির রূপের খেলা। সরিষা চাষে দ্বিগুন লাভ, ফুল ও পাতা ঝড়ে জৈব সার তৈরী করে জমির উর্বর শক্তি বৃদ্ধি পাওযায় নীলফামারী জেলার অনেক কৃষক সরিষা চাষে ঝুকে পড়ছে। এবারের মৌসুমে সরিষা চাষ করে গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হবে বলে জানিয়েছে সরিষা চাষীরা।

স্বরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা সদরের আনাকুল ইসলামের ছেলে সাজু মিয়া তার ৩ বিঘা জমিতে ও লাল মিয়ার ছেলে হাসিনুর তার ২ বিঘা জমিতে এবং পুর্বছাতনাই ইউনিয়নের পূর্বছাতনাই গ্রামের সফিউদ্দি এর পুত্র এমদাদুল হক তার আবাদী ৩ একর জমিতে সরিষা লাগিয়ে ব্যাপক সাফল্য অর্জনের আশা করেছেন। তারা জানান, গত ২ বছর যাবত নিজ উদ্দোগে আবাদ যোগ্য জমিতে সরিষা চাষ করে প্রতি মৌসুমে অন্যান্য আবাদের ত’লনায় বিঘা প্রতি প্রায় ৫০ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত লাভ করে আসছেন তারা। চলতি মৌসুমে সরিষার ফলন বেশি হওয়ায় এবং বর্তমান বাজার দর তুলনামুলক বেশি হওয়ায় এবার বেশী লাভের আশা করছেন তারা। সরিষা চাষিরা জানান, ডিমলা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলীর পরামর্শে ও সরকারী সার্বিক সহযোগিতায় এবারে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে বলে তারা আশা করছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে সরিষা কিনতে আসা ক্রেতারা বলেন, উত্তর অঞ্চলের জমি সরিষা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। অন্যান্য এলাকার চেয়ে উত্তরাঞ্চলের সরিষার দ্বানা পরিপুরক হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা ও দাম দুটোই বেশী। সে কারনে এখান থেকে সরিষা কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রী করে তারাও প্রচুর লাভবান হচ্ছেন। সরিষা চাষে সাফল্য অর্জন করতে কুমার পাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডিমলা কৃষি বিভাগের সরকারী প্রনোদনার ভাল বীজ পেয়ে সঠিক সময় বীজ রোপন, সঠিক ভাবে রোগ নির্নয়, রোগ নিরাময়ের জন্য সঠিক মাত্রায় কীট নাশক সহ ফুলফল বাড়ানোর জন্য ভিটামিন ও বিভিন্ন প্রকার সার প্রয়োগ করতে হবে। তাহলেই আগাম ফল ফলিয়ে তা বাজার জাত করতে পারলেই উচ্চ মুল্যে বিক্রী করা সম্ভব হলে অধিক লাভবান হওয়া যায়। তারা বলেন, ১ বিঘা সরিষা চাষ করতে বর্তমানে খরচ হয়, প্রায় দেড় হাজার টাকা। ভাল ফলন হলে বিঘায় ৬ মন সরিষা পাওয়া যায়। প্রতিমণ সরিষার বর্তমান বাজার মূল্য ৩ হাজার টাকা। অন্যান্য ফসল চাষ করে প্রতি বিঘায় যে পরিমান লাভ হয় তার চেয়ে ঐ পরিমান জমিতে সরিষা চাষ করে দ্বি-গুন বেশী লাভ পাওয়া যায়। এছাড়া সরিষা চাষ করলে ফুল ও পাতা ঝড়ে পড়ে জৈব সার তৈরী হয়ে জমির উর্বর শক্তি বৃদ্ধি করে। সে কারনে এ জমিতে পরবতীতে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয়না ও ধানের ফলনও ভাল হয়। সরিষা চাষে একদিকে যেমন বেশী লাভ হয় অন্য দিকে জমির উর্বর শক্তি বাড়ায়। সেদিক বিবেচনা করে সাধারন কৃষকরাও সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।

ডিমলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী জানান, চলতি মৌসুমে ডিমলা উপজেলায় লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ শত ৬৫ হেক্টর জমি, উৎপাদন হবে ১ হাজার ৭১ মেঃ টন। যা গত বারের তুলনায় অনেক বেশি জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ এলাকার জমি বেলে দোয়াশ পানি ধারনের ক্ষমতা কম,পানি ধারন ক্ষমতার জন্য জমিতে জৈব সারের প্রয়োজন। সরিষা চাষ করলে খাবার তেলের চাহিদা পূরন সহ পাতা ও ফুল পড়ে জৈব সার তৈরী করে একদিকে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে জমিতে পানি ধারন ক্ষমতাও বাড়বে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে