খাগড়াছড়ির রামগড়ে থানাচদ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্রেণী কক্ষে ঐ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর এক উপজাতীয় ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে মামলা করেছে ছাত্রীর মা। ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রীর মা শুক্রবার (১৩ মে) বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো: বেলায়েত হোসেনের(৪২) বিরুদ্ধে রামগড় থানায় মামলা দায়ের করেন।যাহার নং ৪।বেলায়েত হোসেন রামগড়ের লামকুপাড়া গ্রামের নুরুল হুদার ছেলে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায় , ঈদের র্দীঘ ছুটির পর বৃহষ্পতিবার(১২ মে) বিদ্যালয় খোলার দিন পঞ্চম শ্রেণীর মাত্র দুইজন উপজাতীয় ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসে।বেলা ১টায় স্কুল ছুটি হলে অন্যান্য ক্লাসের সব ছাত্র-ছাত্রী বাড়ি ফিরে গেলেও ৫ম শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে হোমওয়ার্কের কথা বলে শ্রেণীকক্ষে রেখে দেন সহকারি শিক্ষক মো: বেলায়েত হোসেন। ঐ সময় স্কুলের অপর সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান স্কুল অফিসকক্ষে কাজ করছিলেন।
এর আগে ছুটির পর প্রধান শিক্ষক ও এক সহকারি শিক্ষক বাড়ি চলে যান। সহকারি শিক্ষক বেলায়েত হোসেন ৫ম শ্রেণীর দুই ছাত্রীকে শ্রেণীকক্ষে ডেকে এনে এদের একজনকে প্রথম বেঞ্চে এবং অপরজনকে পিছনের বেঞ্চে বসিয়ে হাতের লেখা লিখতে বলেন। এসময় শিক্ষক বেলায়েত পিছনের বেঞ্চে বসা ছাত্রীর পাশে বসে তার গোপনাঙ্গসহ র্স্পশকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রীকে স্কুলের বাহিরে এনে একশ টাকার একটি নোট দিয়ে কাউকে কিছু না বলার কথা বলে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বাড়ি ফিরে ঐ ছাত্রী তার মায়ের কাছে শিক্ষকের যৌন নিপীড়নের সব কিছু বলে দেয়। পরে তার মা এলাকার কারবারি ও ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের নেতৃবৃন্দকে ঘটনাটি জানান।
রামগড় উপজেলা ত্রিপুরা সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও রামগড় পৌরসভার ২ নং ওর্য়াড কাউন্সিলর শ্যামল ত্রিপুরা বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবক বিষয়টি তাদের সংগঠনকে জানায়। সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সহায়তায় শুক্রবার(১৩ মে) ভুক্তভোগী ছাত্রীকে সাথে নিয়ে তার মা ফুলবালা ত্রিপুরা রামগড় থানায় শিক্ষক বেলায়েতে হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী দেবী জানান, স্কুল ছুটির পর বাসায় এলে সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান তাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, তাদের স্কুলের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই ত্রিপুর । এদিকে, ছাত্রী নিপীড়নের এ ঘটনায় স্কুল এলাকার উপজাতীয় বাসিন্দারদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না দিলে কোন ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠাবে না বলে বিক্ষুব্দ গ্রামবাসিরা জানিয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিদ্যালয় ছাড়া আশপাশ এলাকা বিদ্যুৎ না থাকায় কিছু ছেলেরা স্কুলে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার চেষ্টা করত।এতে বাধা দেওয়ায় আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।
রামগড় থানার ওসি মোহাম্মদ শামছু্জামান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা সতত্যা নিশ্চিত করে বলেন,আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্বে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যাযাদি/এসএইচ