যমুনার পানি কমতে থাকায় বেড়েছে ভাঙ্গনের তীব্রতা শাহজাদপুরে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন
প্রকাশ | ২৫ মে ২০২২, ১৯:৫২
সিরাজগঞ্জ হার্ট পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার কমেছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তা কমে ১.১৭ সেন্টিমিটারে দাঁড়িয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের আরকান্দি,ঘাটাবাড়ি,জালালপুর,পাকুরতলা,কৈজুরি ইউনিয়নের ভেকা ও হাট পাচিল গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙ্গণ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
গত ২৪ ঘন্টায় এ ৬ গ্রামের অন্তত অর্ধ শতাধিক বাড়িঘর যমুনা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ২ শতাধিক মানুষ। এ বিষয়ে পাচিল গ্রামের আজিদা খাতুন, আম্বিয়া খাতুন, আন্নু খাতুন, নূর ইসলাম, ইয়াসিন সরকার, শুকুর আলী ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বন্যার পানি কমতে থাকায় ভাঙ্গণ আরও তীব্র হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় পাচিল গ্রামে অন্তত ২০টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য গ্রাম মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর যমুনাগর্ভে চলে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব এসব অসহায় মানুষ এখন শিশু সন্তানদের নিয়ে বাধের উপর আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের অভিযোগ চলতি পাচিল-আরকান্দি যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ কাজ যথা সময়ে না করায় চোখের সামনে তাদের বাড়িঘর যমুনা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। তারা আরও বলেন,সময় মত বস্তা ফেলা হলে তাদের আজ এ অবস্থা হতো না। এ জন্য তারা ঠিকাদারের লোকজনকে দায়ী করেন।
এ বিষয়ে কৈজুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন বলেন,পাচিল গ্রামে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের ঠিকাদারের গাফিলতিতে এ বছর এ গ্রামের মানুষ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে। তারা সময় মত বস্তা ফেললে এ ক্ষতি হতো না।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে পাচিল গ্রাম ঘুরে দেখা যায়,দমকা বাতাসের সাথে বড় বড় চাপ ভেঙ্গে পড়ছে। মানুষজন তাদের আসবাবপত্র ও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সর্বস্ব হারানো এসব মানুষের কান্না ও আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। অনেকে তাদের গরু-বাছুর কোথায় সরিয়ে নিবেন তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
জালালপুর গ্রামের আলহাজ আলী, কামরুল ইসলাম, মহির মেম্বর, লালচান বলেন, ভাঙ্গণে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে এখনও কেউ এসে দাঁড়ায়নি ফলে তাদের দিন কাটছে অর্ধহারা-অনাহারে। তারা রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবন যাপন করছে ।
এ বিষয়ে জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুলতান মাহমুদ বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত সহযোগিতা চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোন বরাদ্দ পাইনি। পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন,সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলামের বক্তব্যের জন্য ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
যাযাদি/এস