দেশে দূর্নীতির কারণে প্রবৃদ্ধি ঠিকমত হচ্ছে না : দুদক কমিশনার
প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২২, ২১:২৭
দুর্নীতি দমন কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান বলেছেন, অর্থনীতিবিদরা বলেন দুর্নীতির কারণে দেশে প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ২ভাগ কমে গেছে। আমি বলবো এ পরিমাণ দুই হোক আর পৌণে দুইভাগ হোক দুর্নীতির কারণে যে আমাদের প্রবৃদ্ধি ঠিকমত হচ্ছে না এতে কোন সন্দেহ নেই। শুধু ওয়াজ নছিহত করে দুর্নীতি মুক্ত করা যাবেনা। চোরায় না শুনে ধর্মের কাহিনী। তাই আমাদের এখন দায়িত্ব হলো দুর্নীতি বিরুদ্ধে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা, শাস্তির ব্যবস্থা করা। পরিবারের স্ত্রী-সন্তানদেরও এ ব্যাপারে বুঝাতে হবে। নিজেদের যে আয় আছে তা দিয়ে চলতে হবে। স্ত্রী-বাচ্চারা যদি কিছু আবদারও করে তা কিনে দেয়ার জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া যাবে না।
বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ২০২১-২২ আওতাধীন জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে দুর্নীতি বিরোধী এক সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক কমিশনার ওইসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ^বিদ্যালয়ের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ও নৈতিকতা কমিটির ফোকাল পয়েন্ট অধ্যাপক এম. ময়নুল হক। এছাড়া অনুষ্ঠানে বশেমুরকৃবি’র সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, আমরা দূর্নীতির বিরুদ্ধে যে সব কিছু করতে পারি তা নয়। বাংলাদেশে দূর্নীতির বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়, তার ১০০টার মধ্যে ১০টার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারছি। কারণ অধিকংশ অভিযোগের ক্ষেত্রেই দালিলিক প্রমাণ থাকেনা। এজন্য আমরা অনেক কিছু চোখের সামনে দেখি কিন্তু কিছুই করতে পারছিনা। ৪/৫বছর আগে মামলার শতকরা ৩৬/৩৭ভাগ কনভিকশন হতো। এখন তা ৬৭/৬৮ভাগে এ উন্নীত হয়েছে। এখন আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তিনি রেসক্রস ময়দানে ১৯৭২সালের ১০জানুয়ারি তার বক্তব্যে বলেছেন, যার যা কাজ তা সবাই ঠিক মতো করে যান। কেউ ঘুষ খাবেন না। এদেশে আর দুর্নীতি চলতে দেয়া হবে না। তিনি ১৯৫৭সালে ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা সেনানিবাসে বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, এতো রক্ত দেয়ার পর যে স্বাধীনতা এনেছি। কিন্তু চরিত্রের পরিবর্তন অনেকেরই হয়নি। ঘুষখোর, দূর্নীতিবাজ, মুনাফাখোরী ও চোরাকারবারীরা বাংলার দু:খী মানুষদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে দিয়েছে। দীর্ঘ তিন বছর তাদের এসব ছেড়ে চলতে বলেছি। চোরায় না শুনে ধর্মের কাহিন। কিন্তু আর চলতে দেয়া হবে না। ১৯৭৫ সালে টাঙ্গাইলে এক জনসভায় মৃত্যুর প্রায় এক মাস আগে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, দেশের শতকরা২৫ভাগ দু:খ দূর হয়ে যাবে যদি দুর্নীতি বন্ধ করা যায়। আমরা কি বঙ্গবন্ধুর সেই কথা রাখতে পেরেছি।
ভিসি অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, দূর্নীতি দেশের উন্নয়নে বড় বাঁধা। যে দেশ ও সমাজে দুর্নীতি মুক্ত হবে সে দেশ ও সমাজের উন্নয়ন ঘটবে।
যাযাদি/এস