শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

​​​​​​​পার্বতীপুরে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে অনেক কর্মহীন মানুষ

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  ৩০ জুন ২০২২, ১৭:২৩

রেলওয়ে জংশনের বদৌলতে গড়ে উঠা দেশের উত্তর জনপদের দিনাজপুরের উপজেলা শহর পার্বতীপুর। এই শহরে চলাচলের প্রধান বাহন হচ্ছে ব্যাটিরি চালিত ভ্যান। এক সময় এখানকার প্রধান বাহন ছিল রিক্সা। যা পা দিয়ে চালানো হতো। এখন রিক্সা নেই বললেই চলে। রিক্সার স্থান দখল করেছে ব্যাটিরি চালিত ভ্যান। এখানকার সর্বত্রই ভ্যানের অবাধ বিচরণ।

পার্বতীপুর শহরকে এখন ভ্যানের শহর বলা যেতে পারে। ব্যাটিরি চালিত এই সব ভ্যান চালকদের ট্রাফিক আইন কানুন মেনে চলা সহ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে এই বাহনটি আরো জনপ্রিয় বাহনে পরিনত হবে।

তবে এই ভ্যান স্হানীয় ভাবে একদিকে যেমন যোগাযোগের প্রধান বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে,অন্যদিকে ঠিক তেমনি অনেক কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্হানের পথ খুলে দিয়েছে।

এমনই একজন মানুষ সোলেমান চৌধুরী (৩৮)। পেশায় ভ্যান চালক হলেও অন্যসব ভ্যান চালকদের চেয়ে তিনি একটু আলাদা,ব্যতিক্রমী। তাঁর পোষাক-পরিচ্ছদ,চলা-ফেরা,কার্য-কলাপে রয়েছে ভিন্নতা। যা সহজেই সবার দৃষ্টি কাড়ে। অনেক দিন ধরেই সে ভ্যান চালাচ্ছে এবং তাঁর মধ্য একটু ভিন্নতাও রয়েছে। স্বচ্ছল পরিবারে জন্ম গ্রহণ করলেও সোলেমান চৌধুরী এক সময় কর্মহীন হয়ে পড়ে। জীবন জীবিকার তাগিদে শুরু করে ভ্যান চালানো। বর্তমানে ভ্যান চালানোর আয় দিয়েই তার সংসার চলছে।

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের হাবড়া গ্রামের মরহুম সাহেদ চৌধুরী'র পুত্র মোঃ সোলেমান চৌধুরী ওরফে সোলে। এক সময় কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও বর্তমানে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। গ্রামের বাড়ী হাবড়ায় হলেও সারাদিন উপজেলা শহরেই ভ্যান চালান।

তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। স্ত্রী আর সন্তানদের ভালো রাখতেই তাঁকে এ পথ বেছে নিতে হয়েছে। এক সময় তাঁদের পরিবারিক অবস্থা ভালো ছিল। এখন সে অবস্থা আর নেই। তবে তাঁর মধ্যে রয়েছে আভিজাত্যের লক্ষন। ভ্যান চালাতে গিয়েও তিনি তা থেকে দুরে সরে যেতে পারেননি। সাধারণত অন্যসব ভ্যান চালকেরা যে ধরনের পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার করে থাকেন। তিনি তা করেন না। মাথায় স্টাইল করা কালো চুল, চোখে সানগ্লাস, গায়ে ডিজাইন করা পাঞ্জাবি, পরনে সাদা লুঙ্গি, পায়ে ডিজাইন করা জুতা আর রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে মাথার উপরে ছাতা। দেখতে সিনেমার হিরোদের মতো। তাঁকে হঠাৎ করে দেখলে কেউ সহজে বিশ্বাস করবে না যে সে একজন ভ্যান চালক। প্রথম দিকে এমনটি হলেও এখন তাঁকে সবাই চিনে ফেলেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্যসব ভ্যান চালকদের চেয়ে আমার আয় বেশী। কারন যাত্রীরা আমাকে বেশী চেনে। তার ভ্যানে থাকা একজন যাত্রী বললেন, এমন সুন্দর পোশাক পরিহিত ভ্যান চালক এর আগে কখনও দেখেনি। তবে জীবন জীবিকার তাগিদেই তাকে বেছে নিতে হয়েছে এ পথ।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে