শ্রীপুরে হঠাৎ বেড়েছে ঠান্ডা-জ্বর-শরীর ব্যাথা! আতঙ্ক
প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০২২, ২১:২৯
গাজীপুরের শ্রীপুরে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে সর্দি-কাশি-জ্বর ও শরীর ব্যথায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপজেলার প্রায় ঘরে ঘরেই এখন এ ধরনের রোগী থাকার খবর পাওয়া গেছ। তাদের মধ্যে জ্বর নিয়ে ভীতি থাকলেও করোনা পরীক্ষায় তেমন আগ্রহ নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, রোববার এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহিঃ বিভাগে রোগী এসেছে ১০৪৭ জন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিয়েছে ১৮১ জন যাদের বেশির ভাগই শরীর ব্যাথা,জ্বর ও ঠান্ডা রোগে আক্রান্ত।
এ পর্যন্ত উপজেলায় ১২ হাজার ৫৩৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫৯৪ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। উপজেলায় এক নারীসহ ৯জন মারা গেছেন। হোম কোয়ারান্টাইনে রয়েছে ৪৮ জন। বাকীরা সবাই সুস্থ হয়েছেন। সুত্র আরও জানায়, সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। হাসপাতালের জরুরী ও বহির্বিভাগে এখন প্রতিদিন গড়ে ৯০০-১১০০ রোগী আসছেন। এসব রোগীর মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে অনেক রোগীরই উচ্চ তাপমাত্রা, অর্থাৎ ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি জ্বর উঠে যাচ্ছে। কিন্তু সাধারণ ওষুধে সুস্থ হতে একটু সময় লাগছে। সোমবার সকাল থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১৩ শিশুসহ ৭২জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এরই মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আইয়ুব আলী, সিনিয়র স্টাফ নার্স বিলকিস পারভীন ও উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার আরিফ হোসেন করোনায় আক্রান্ত। এছাড়াও একই উপসর্গ নিয়ে হোম কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন হাসপাতালটির চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ ডাঃ শাহেলা শারমীন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রায়ই বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। তাদের বেশিরভাগই স্থানীয় ফার্মেসি থেকে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ সেবন করছেন। এতেই অনেকে সুস্থ হয়েও উঠছেন। তাদের কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন।মাহতাব উদ্দিন এম.এ নামে একজন স্কুল শিক্ষক বলেন, "গত এক সপ্তাহ ধরে আমি প্রচন্ড শরীর ব্যথা, ঠান্ডা ও জ্বরে ভুগছি"। দু-দিন ধরে ১০ বছর বয়সী মেয়েটা জ্বর ও কাশিতে ভুগছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করে বর্তমানে আমরা সুস্থ আছি। ময়েজউদ্দিন নামে একজন জানান, তার পরিবারে পর্যায়ক্রমে ৫ সদস্যের সবাই শরীর ব্যাথা,জ্বর ও ঠান্ডায় অসুস্থ হয়েছেন।এদিকে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর বেশিরভাগ রোগীই মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়ছেন। দুর্বল শরীরে জ্বর নিয়েও অনেকে ঈদের বাজারঘাটসহ জনসমাগমের এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিষয়টিকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকেরা।
শ্রীপুর পৌর শহরের ওষুধের দোকানি উজ্জ্বল মিয়া বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে সর্দি-কাশি-জ্বরের ওষুধ বিক্রি ব্যাপক বেড়ে গেছে। যা অবস্থা, তাতে মনে হয় এখন ঘরে ঘরে জ্বর। এ ধরনের বেশিরভাগ রোগী বা রোগীর স্বজন চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে তাঁদের কাছে এসে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রণয় দাস যায়যায়দিনকে বলেন, কয়েকদিন ধরেই জ্বর সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও বর্হিবিভাগে আসা রোগিদেরকে সেবা দিয়ে সুস্থ করতে চিকিৎসকরা যথাসার্ধ্য চেষ্টা করছেন। আমাদের দুইজন ডাক্তার ও দুইজন কর্মচারী ইতিমধ্যেই এমন অসুখে রয়েছেন।
যাযাদি/ এস