প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২২, ২০:৪৭

অনলাইন ডেস্ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পাখীর হাট ; লাখ টাকা বেচা-কেনা

স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্ত মঞ্চ ময়দানটি এখন জেলাবাসীর কাছে পাখীর হাট হিসেবে পরিচিত। এটি অস্থায়ী হাট। পাখী বেচা-কেনার নির্দিষ্ট কোন হাট না থাকায় প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার এই মাঠে পাখির হাট বসে। বর্তমানে পাখীর হাটটি ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

সপ্তাহের শুক্রবার ও সোমবার হাজার হাজার পাখির কিচির, মিচির কলতানে মুখরিত থাকে এই মাঠটি। প্রতি হাটে লাখ টাকার পাখি বেচা-কেনা হয়।

ময়না, টিয়া, তোতা, কাকাতুয়া, কয়েক প্রজাতির ঘুঘু, লাভ বার্ড, কয়েক প্রজাতির শালিক,ডাহুক, প্রিন্স, কোয়েল, টার্কি মোরগ, তিতির, বিভিন্ন প্রজাতির (রেইসার, হুমার, মেগপাই, সিরাজি, লুটন, গিরিবাজ, কিং, ময়ূরপঙ্খী, বিউটি, ময়না টুইট্টা, গড়াসহ বিভিন্ন জাতের) কবুতরসহ অর্ধশত জাতের পাখির পাশাপাশি এখানে খরশোগও বিক্রি করা হয়।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্ত মঞ্চ ময়দানের বিভিন্ন প্রজাতির খাঁচা ভর্তি পাখী নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। পাখীর সাথে আছে খরগোশ। আছে বিদেশী মোরগ-মুরগী।

সকাল আটটার পর থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতারা আসতে থাকে এই পাখী হাটে। দুপুরের পর কমতে থাকে ক্রেতার সংখ্যা।

বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তাদের আক্ষেপ। তারা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাখী বিক্রির স্থায়ী কোন হাট নেই। নির্ধারিত জায়গা না থাকায় তাদেরকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তারা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাখীর হাটের যাত্রা বহু বছর আগে থেকেই।

এক সময় জগত বাজারে, পরে পর্যায়ক্রমে বোডিং মাঠ, মৌড়াইল রেল গেইট, সুপার মার্কেটের সামনে, পুরাতন কাচারির সামনে, পুরাতন জেলখানার হয়ে বর্তমানে তারা বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্ত মঞ্চ ময়দানে পাখী নিয়ে বসছেন। তবে সপ্তাহে মাত্র
দুইদিন।      

পাখী বিক্রেতা মোঃ হারুন-অর-রশীদ বলেন, গত ৭/৮ বছর ধরে তিনি হাটে পাখি নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, পাখী বিক্রি করার জন্য আমাদেরকে স্থায়ীভাবে একটি জায়গায় বসানোর ব্যবস্থা করে দিতে আবেদন নিয়ে বহু জায়গায় ঘুরেছি। কিন্তু কোনো ধরণের লাভ হয়নি। বেহায়ার মতো আমরা বর্তমান জায়গায় বসেছি।

তিনি বলেন. তার কাছে থাকা ইন্ডিয়ান কাকাতুয়া ৬ হাজার টাকা, অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু ১২০০ টাকা, চায়না ঘুঘু- ২০০০ টাকা জোড়া দরে বিক্রি করেন। এছাড়াও নানা জাতের পাখী তিনি বিক্রি করেন। প্রতি হাটেই তিনি গড়ে ১০ হাজার টাকার মতো পাখী তিনি বিক্রি করতে পারেন। পাখী বিক্রেতা অলি আহাদের দোকান থেকে থেকে এক জোড়া পাখী কিনতে আসেন আরিফুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা। আরিফুল ইসলাম বলেন, ছেলের শখ পূরণ করতেই তিনি পাখীর বাজারে এসেছেন। এক জোড়া পাখি কিনেছেন ১০০০ হাজার টাকা দিয়ে।

দোকানের মালিক অলি আহাদ বলেন, তিনি মূলত অ্যাকুরিয়াম ব্যবসায়ি। কিছুদিন ধরে এই হাটে পাখি বিক্রি করেন। বিক্রিও মোটামুটি ভালোই।

জেলার আখাউড়া উপজেলা থেকে কবুতর নিয়ে আসেন জানু মিয়া প্রকাশ জাহাঙ্গীর নামে এক বিক্রেতা। পাঁচ জোড়া কবুতরের মধ্যে তিন জোড়া বিক্রি করেছেন।

ব্যবসায়ী জানু মিয়া বলেন, তিনি ইলেকট্রনিক সামগ্রী মেরামত কাজের পাশাপাশি বাড়িতে কবুতর পালন করেন। সপ্তাহের দু’টি হাটে তিনি এখানে কবুতর নিয়ে আসে। এ হাটে রেইসার, হুমার, মেগপাই, সিরাজি, লুটন, গিরিবাজ, কিং, ময়ূরপঙ্খী, বিউটি, ময়না টুইট্টা, গড়াসহ অনেক
জাতের কবুতর পাওয়া যায়। স্থায়ী একটি বাজারের জন্য তিনি দাবি জানান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের পাখী ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া বলেন, তিনি এই হাট থেকে কবুতরসহ বিভিন্ন ধরনের পাখী কিনে নবীনগর উপজেলার বড়াইল বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন।

যাযাদি/এসএস