৩০০ টাকা মজুরির দাবী

মিছিল নিয়ে চা-শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও কর্মবিরতি

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২২, ২১:০৭

রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

সারাদেশের চা শ্রমিকদের মতো মৌলভীবাজারের রাজনগর সবকটি চা বাগানের শ্রমিকরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন।

এসময় তারা সড়কের পাশে মানববন্ধন করেন। পরে উত্তেজিত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে নিজেদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিয়ে সড়ক অবরোধ করে।

৩০০ টাকা মজুরির দাবীতে শনিবার সকাল থেকে উপজেলার রাজনগর চা বাগান, মাথিউড়া চা বাগান, শফিনগর, করিমপুর চা বাগান, ইটা চা বাগান, উদনা চা বাগান, ইন্দানগর চা বাগান, উত্তরভাগ চা বাগানসহ ১৩টির মধ্যে সবকয়টি চা বাগানের কয়েক হাজার শ্রমিক পৃথক পৃথক স্থানে মিছিল, মানববন্ধন, অবরোধ ও সমাবেশ করেছে। এর আগে গত ৪দিন ২ ঘন্টার কর্মবিরতি করলেও পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। টেংরা ইউনিয়নে অবস্থিত চা বাগানগুলোর শ্রমিকরা শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেংরা বাজারে
মানববন্ধন শুরু করে। এসময় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা নিজেদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিয়ে কয়েক ঘন্টা কুলাউড়া-মৌলভীবাজার সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে দুই প্রান্তের প্রায় দেড় কিলোমিটার জুড়ে যানজট দেখা দেয়। একই দাবিতে মুন্সিবাজার ইউনিয়নের করিমপুর, ইটা ও উদনা চাবাগানের শ্রমিকরা মুন্সিবাজারে মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে মানববন্ধন করে। উত্তরভাগ ইউনিয়নের ইন্দানগর, উত্তরভাগ চাবাগান সহ কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা একই সড়কে মানববন্ধন ও অবরোধ করে রাখে।

এসময় তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। বর্তমানে একজন শ্রমিক দৈনিক মজুরি পান ১২০ টাকা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। শ্রমিকরা তাদের মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবি জানিয়ে নিজেদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।

রাজনগরের উত্তরভাগ চা বাগানের দিপক কৈরি বলেন, আমরা ১২০ টাকা মজুরি পাই, এদিয়ে আমাদের সংসার চলেনা। আমরা অনেক কষ্ট করে জীবন কাটাই। খাওয়াদাওয়া ভালো হয় না, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ভালো হয় না। সব কিছুর দাম বাড়ে আমাদের মজুরি বাড়ে না। আমরা কোন রকমে জীবন কাটাচ্ছি। চায়ের দাম ও উৎপাদন বাড়ে, আমাদের মজুরি কেন বাড়বে না?

মাথিউড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি সুগ্রিম গৌড় বলেন, চা শ্রমিকদের একদিনের মজুরি দিয়ে ১ লিটার পেট্রলও কেনা সম্ভব না। শ্রমিকরা কি নিদারুন কষ্টে রয়েছেন তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধগতিতে ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে কিচ্ছু হয় না। শ্রমিকরা ভালোমন্দ খেতে পারে না। মজুরি বৃদ্ধি না হলে শ্রমিকরা কঠিন পরিস্থিতিতে পরবে।

যাযাদি/এসএস