মাগুরার মহম্মদপুর সড়কে অল্প জায়গা

যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ,ভোগান্তিতে জনগণ

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:৩২ | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:৪৯

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের জনগুরুত্বপূর্ণ ৫টি সড়কের অল্প জায়গাতে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ। স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী,সাধারণ মানুষ এবং যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ বাড়ছে। উপজেলা পরিষদ গেট থেকে মাত্র ৩শ’ গজ উত্তরে (উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে) গুরুত্বপূর্ণ শহীদ আহম্মদ-মহম্মদ সড়কের একশ’গজে থই থই করছে পানি। পানি ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষকে। সড়কের ওই জায়গাটুকুতে যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।থানা সড়ক,ডাকবাংলো সড়ক,সাবরেজিস্ট্রি সড়ক এবং উপজেলা ভূমি অফিসের পশ্চিমের হাসপাতাল সড়কের অবস্থা খুবই শোচণীয়। এসব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি বাড়ছে। সামান্য বৃষ্টিতে এসকল সড়কের অবস্থা খুবই শোচণীয় হয়ে পড়ছে। চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অবর্ণনীয় দুভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আহম্মদ-মহম্মদ সড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে,উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক থেকে বড়জোর ৩শ’ গজ উত্তরে (উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে) গুরুত্বপূর্ণ শহীদ আহম্মদ-মহম্মদ সড়কের একশ’গজ জুড়ে থই থই করছে পানি। পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় গুরুত্বপূূর্ণ কার্পেটিং সড়কে জমেছে হাটু পানি। এ সড়কটি অধিক গুরুত্বপূূর্ণ। কারণ এই পথেই শেখ হাসিনা সেতুর উপর দিয়ে ঢাকাগামী বিভিন্ন কোম্পানীর ৫/৭টি বাস চলাচল করে। এ ছাড়া রাজবাড়ি, পূর্বনারায়ণপুর, বাজার রাধানগর,  জাঙ্গালিয়া, গোপালনগর, রায়পুর, বঙ্গেশ^র, ধুলজুড়ী, কাশিপুর, সিন্দাইন, পাল্লা ও নাগড়িপাড়া গ্রামসহ অন্তত: ২০ গ্রামের মানুষ ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। ‘বীরেন শিকদার আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ’, ‘মহম্মদপুর আদর্শ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বি. এম কলেজ’, ‘মহম্মদপুর এস. এ. আর দাখিল মাদ্রাসা’, ‘বিআরডিবি অফিস’, ‘ইউনিয়ন ভূমি অফিস’ এবং ‘কালীপদ রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’-এর অগণিত শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও শিক্ষক-কর্মচারিদেরকে এ রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে একশ’গজ সড়কে হাটু পানি থাকায় দুর্ভোগ ও দুর্দশার অন্ত: থাকে না।

ঢাকাগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের স্থানীয় কাউন্টার মাস্টার আক্তারুজ্জামান কাবুল বলেন, ‘প্রতিদিন হাটু পানি মাড়িয়ে বাড়িতে যাতায়াত করতে হয়।’

একই ভোগান্তির চিত্র দেখা গেছে থানা সড়ক এলাকায়। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের এক কিলোমিটার রাস্তা বেহাল দেখাযায়। পুরো সড়কটির ইট-খোয়া ও পিচ-পাথর উঠে গিয়ে ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহম্মদপুর বাজার থেকে থানা সড়কে প্রবেশের শুরুর অংশের অবস্থা বেশি মারাত্বক। হাটু পানিতে ইট ফেলে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাড়ি দিতে হচ্ছে ৫০ গজ সড়ক। ভাঙাচোরা ও বেহাল সড়কের কারণে উপজেলার কোথাও হামলা, সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলা ঘটলে গাড়ি ও বাইক নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব ঘটে। ধুপুড়িয়া, জাঙ্গালিয়া, মুরাইল, রায়পাশা ও চরপাচুড়িয়াসহ ১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করেন এই সড়ক দিয়ে। এছাড়া উপজেলার অধিকাংশ গ্রামের মানুষ আইনি সহায়তাসহ নানান প্রয়োজনে থানায় আসনে। ‘উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর’, ‘মহম্মদপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়’, ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম’, ‘মহম্মদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’-এ যাতায়াতের জন্য এ সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূূর্ণ।

মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায় বলেন, ‘থানা সড়কটির অবস্থা খুবই বেহাল। এটির দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।’

ডাকবাংলো সড়কের বাসিন্দা ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটির বেহাল অবস্থা। এটি এখনও ইটের সড়ক, এখানে আধূনিকতার ছোঁয়া লাগেনি।’

উপজেলা ভূমি অফিসের পশ্চিমপ্রান্ত থেকে হাসপাতাল সড়কের অবস্থাও খুবই নাজুক। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা-পানি জমে যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়ছে। 
এই সড়কের সুমন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সুমন বিশ্ববাস লেন, ‘এক পশলা বৃষ্টিতে কাদা-পানি জমে চলাচলে মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’

মহম্মদপুর আদর্শ দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাগর বলেন, ‘সামান্য সড়কে দুর্ভোগ বেশি। এ সড়কে পায়ে হেঁটে চলাচল করতেও হিমশিম খেতে হয়।’

জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কগুলোর দুর্ভোগ ও দুর্দশার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, ‘ সবগুলো সড়কের দুরাবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। সরেজমিন পরিদর্শণ পূর্বক জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’