মেহরপুরে যৌতুক না দেওয়ায় গৃহবধু আঁখিকে নির্যাতন

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:৪১ | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:৪৯

মেহেরপুর ( গাংনী) প্রতিনিধি

দাবীকৃত যৌতুক দিতে না পারায় গৃহবধু আঁখির জিবনে নেমে এসেছে অন্ধকার।অকথ্য নির্যাতনের পর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে তাকে।শুধু তাই নয়, আঁখির স্বামী আয়নাল হক দ্বিতীয় বিয়ের পিড়িতেও বসেছেন। এ বাস্তবতায় দুই সন্তান নিয়ে এখন মানবেতর জিবন যাপন করছেন আখি।

গৃহবধু আঁখি খাতুন (২৫)।মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামের মৃত আসলাম আলীর মেয়ে। 

জানা যায়,নির্যাতনের যথার্থ বিচার পেতে আঁখি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মেহেরপুর কোর্টে মামলা করেছে।

আঁখি খাতুন জানান,২০১৭ সালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা শাহপুর গ্রামের চাঁদ আলীর ছেলে আয়নাল হকের সাথে তাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। কিন্ত তার বৈবাহিক জীবনটা সুখের হয়নি। আদরের পরিবর্তে পেয়েছে স্বামীর নিষ্ঠুর নির্যাতন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে আঁখিকে নির্যাতন করে আসছে। সেই সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে আয়নাল। এরই মধ্যে দুই সন্তানের জন্ম দেয় আঁখি। বড় ছেলে তৌফিক (৫) ও ছোট ছেলে তাওহীদ (৬ মাস)। 

২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর স্বামী আয়নাল স্ত্রী আঁখিকে যৌতুকের দাবীতে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। সে সময় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মেহেরপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। পরে তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাসের শর্তে আঁখি আবারো যায় স্বামীর বাড়ি। কিন্তু যৌতুক লোভী স্বামী আয়নাল কয়েক দিন বাদে আবারো নির্যাতন শুরু করে। ২০২২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী হত্যার উদ্দেশ্যে আবারো মারধর শুরু করে আঁখিকে।তার আর্ত চিৎকারে প্রতিবেশীরা আঁখিকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কিছুটা সুস্থ হয়ে আঁখি চলে আসে তার পিতার বাড়িতে। নির্যাতনের যথার্থ বিচার পেতে আঁখি আবারো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মেহেরপুর কোর্টে মামলা করে।

এদিকে আয়নাল তার পরকীয়া প্রেমিকার সাথে দ্বিতীয় বিবাহ করে। আঁখির অভিযোগ এ ঘটনায় সহযোগীতা করেছে আয়নালের বড় ভাই আশাদুল হক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসমত আলী। গত ১১ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করলে আদালত আয়নালকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।দুই সন্তান নিয়ে আঁখি এখন তার মায়ের বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছে।  নারী ও যৌতুক লোভী আয়নাল ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে আঁখি ও তার পরিবারের লোকজন।

এ বিষয়ে আয়নালের বড় ভাই আশাদুল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন,আঁখি খাতুন একজন বদ মেজাজী মেয়ে। এক সন্তান হওয়ার পর তাদের মধ্যে তালাক হয়ে যায়। বাচ্চাটির কথা চিন্তা করে আবারে তারা সংসার পাতে। কয়েক মাস ভাল থাকার পরে আবারো সমস্যা শুরু হয়।

সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসমত আলী জানান,তাদের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।বিভিন্ন সংস্থায় ও কোর্টে অভিযোগ ও মামলা চলমান আছে। একাধিক সালিশ মিমাংসাও হয়েছে তবে এখনও কোন সমাধানে আসা সম্ভব হয়নি।