শেরপুরে ধর্ষণ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত  আসামি গ্রেফতার 

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:০৯

শেরপুর জেলা প্রতিনিধি

অপস কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার আশিক উজ্জামান এক প্রেসব্রিফিং এ বলেন ভিকটিম (১৫) কালিয়াকৈর রতনপুর স্থানীয়  একটি ব্রাক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করতেন। প্রতি বছরের ন্যায় রোজার ঈদে ছুটি কাটানোর উদ্দেশ্যে সপরিবারে

গত (৬ জুলাই ২০১৬) গ্রামের বাড়িতে যান। ঈদের ছুটি শেষে ভিকটিমকে তার নানীর কাছে রেখে ভিকটিমের মা ভাই ও বোনসহ গাজীপুরে চলে যান। ভিকটিমের মামা গত (২০ জুলাই ২০১৬)  ভিকটিমের মাকে ফোন করে জানাই যে, গত (১৯ জুলাই ২০১৬) রাত ৮ টা হতে ভিকটিম কে পাওয়া যাচ্ছেনা ।

খবর পেয়ে তার মা গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন এবং ভিকটিমের নানির কাছ থেকে জানতে পারেন যে, মোঃ আমান উল্লাহ (২৩), বাকাকুড়া গ্রামের, ঝিনাইগাতী থানার, শেরপুর জেলার ভিকটিমের বাড়িতে আসিয়া কথাবার্তা বলিত। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠে। 

ভিকটিম আসামি মোঃ আমান আল্লাহকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তাহা প্রত্যাখান করে ধর্ষন ও হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। 

এমতাবস্থায় আসামি কাল্লু মিয়া (৪০), বাঁকাকুড়া গ্রামের, ঝিনাইগাতী থানার, শেরপুর জেলার, ভিকটিমের সাথে কথা বলার উদ্দেশ্যে বাড়িতে এসে ভিকটিমকে ডেকে নিয়ে যায়।

তারপর থেকেই ভিকটিম নিখোঁজ হয় এবং আসামি আমান উল্লাহ ও তার মা এবং কালু মিয়া পলাতক হয়। ভিকটিমের মা বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি করে কোন সন্ধান না পেয়ে গত (২১ জুলাই ২০১৬) বেলা অনুমান ১০:০০ ঘটিকার সময় স্থানীয় মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম মিস্টার কে বিষয়টি অবগত করেন।  

মেম্বার এর কাছে জনৈক ফজল ফোন করে জানান যে, জিয়ারখালে একটি লাশ পাওয়া গেছে। এই সংবাদের প্রেক্ষিতে মেম্বার ও ভিকটিমের মা পশ্চিম বাঁকাকুড়া সাকিনে এতিমখানার পশ্চিম পাশে জিয়ারখালে পানিতে ভাসমান একজনের লাশ দেখতে পেয়ে পানি থেকে উপরে তুলে ভিকটিমের মা তার মেয়ের লাশ সনাক্ত করেন।

 উক্ত লাশটি বীভৎস অবস্থায় দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ এসে ভিকটিমের সুরতহাল প্রস্তুতপূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যায়। এর প্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে এজাহার দাখিল করিলে অফিসার ইনচার্জ ঝিনাইগাতী থানায় মামলা করেন। 

তদন্তকারী অফিসার মামলার তদন্ত শেষে আসামীর বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দনম আইনে অভিযোগ পত্র বিজ্ঞান আদালতে দাখিল করেন। মামলার ঘটনার পর থেকেই আসামী কালু মিয়া আত্মগোপনে চলে যায়।

 দীর্ঘ ০৭ বছর আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় কালু মিয়া দেশের বিভিন্ন স্থানে সামিউল ইসলাম নাম ধারণ করে শ্রমিক এবং রাজমিস্ত্রি পেশায় নিয়োজিত ছিল। পরবর্তীতে বিজ্ঞ বিচারক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শেরপুর মহোদয় গত (১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮) আসামি কালু মিয়া (৪০) কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৩) ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে।

পরবর্তীতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম.এম. সবুজ রানা এর নেতৃত্বে র্যাবের একটি আভিধানিক দল ২৪ জানুয়ারি অনুমান ১৮:২০ ঘটিকায় গাজীপুর জেলা শ্রীপুর থানাধীন তাকুয়া গার্মেন্টস এর সামনে হতে আসামিকে আটক করে । ধৃত আসামিকে ঝিনাইগাতি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
যাযাদি/ এম