মেঘনার পাড়ে দুই ঘণ্টার জমজমাট হাট

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:২১

চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড়ে শীত মৌসুমে প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার হাট বসে। এ সময়ের মধ্যে চরাঞ্চল থেকে আসা শাক-সবজি, মাছ, হাঁস ও মুরগি বিক্রি হয়ে যায়।

বিশেষ করে সবজি কেনারজন্য বেপারীদের ভিড় থাকে। টাটকা এসব সবজির চাহিদা মেঘনার পূর্ব পাড়ে বাজারগুলোতে।

মুহূর্তের মধ্যে কয়েক লাখ টাকার লেন-দেন হয় এ হাটে। চরাঞ্চলের মানুষের জীবন সংগ্রামের এটি একটি অংশ।

বুধবার সকালে উপজেলার তেলির মোড় লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে এ হাটের বিকিকিনি। ভোর থেকেই মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড় নীল কমল ইউনিয়নের মাঝের চর, ইশানবালাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি চর থেকে ট্রলারে করে লোকজন শাক-সবজি, মাছ, হাঁস ও মুরগি নিয়ে আসছেন। এর মধ্যে চরাঞ্চলের লাউ, কুমড়া, টমেটো, বেগুন, আলু, মরিচ, ধনিয়া পাতা, কাঁচা ও পাকা কলা ইত্যাদি বেশি আমদানি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সাজেদ বিল্লাহ ও গিয়াস উদ্দিন সবুজ জানান, চরাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে কৃষিকাজ ও মাছ শিকার করেন। শীত মৌসুমে মনোরম পরিবেশে তেলির মোড় লঞ্চঘাটের এ হাট জমজমাট থাকে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ ছুটে আসে টাটকা সবজি ও মাছ কেনার জন্য। তবে ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে সকাল ৮টার মধ্যে বাজার শেষ হয়ে যায়। কারণ এখানকার পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সবজি কিনে গ্রামের বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

উপজেলার উত্তর আলগী থেকে আসা মানসুর নামে এক ক্রেতা জানান, চরাঞ্চল থেকে আসা মাছগুলো বরফ ছাড়া। পোয়া মাছ প্রতি কেজি ১২০-১৫০ টাকা, বাটা মাছ প্রতি কেজি ১৫০-২০০ টাকা, মিশ্রিত ছোট মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, গুঁড়া চিংড়ি ১০০-১২০ টাকা কেজি। এখানে ছোট মাছই নিয়ে আসেন বেশির ভাগ জেলে। মৌসুম না থাকায় ইলিশের আমদানি তেমন নেই। জাটকা মাঝে মধ্যে পাওয়া যায়।

পাইকারি সবজি বিক্রেতা সেলিম মুন্সী জানান, চরাঞ্চল থেকে আসা শাক সবজি খুবই টাটকা। দামও কম। পাইকারি প্রতি কেজি টমেটো ৩০-৪০ টাকা, বেগুন ১০-১৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ২৫-৩০ টাকা, আস্ত একেকটি কুমড়া ৩০-৫০ টাকা, লাল শাক প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৮-১০ টাকা, কাঁচকলা প্রতি হালি ১০-১২ টাকা, নতুন আলু প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা, ধনিয়া পাতা কেজি ২০-২৫ টাকা।

উপজেলার মহজমপুর গ্রামের হাঁস-মুরগির খুচরা বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, চরাঞ্চল থেকে আসা হাঁস-মুরগি কিনে আমরা শহরে নিয়ে বিক্রি করি। আবার অনেক সময় হোটেল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। একজোড়া দেশি হাঁসের দাম এখানে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। এক জোড়া ছোট সাইজের মুরগি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।

চাঁদপুর জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হাইমচর এলাকার খুরশিদ আলম শিকদার জানান, মেঘনার পাড়ে বহু বছর ধরেই অল্প সময়ের জন্য অস্থায়ী হাট বসে। নদীর পশ্চিম পাড়ের চরাঞ্চলের নারী-পুরুষরা ট্রলারে করে খুব সহজেই এখানে এসে নিজেদের উৎপাদিত হাঁস, মুরগি মাছ ও সবজি বিক্রি করতে পারেন। সরকারিভাবে এ হাটের কোনো ইজারা হয় না।
যাযাদি/ এম