মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার আংশিক উদ্বোধন

প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:০৬

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার নতুন ভবন বৃহস্পতিবার সকালে উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে হাসপাতাল ভবনের উদ্বোধন করেন আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, সাবেক নৌমন্ত্রী, মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান। 

তবে হাসপাতালটির কার্যক্রম পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি। জনবলের অভাবে আংশিক কার্যক্রম চালু হয়েছে। বর্তমানে আড়াইশো শয্যার নতুন হাসপাতালটির মাত্র ৫০ শয্যা চালু হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন থেকে মোট ১৫০ শয্যার কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর  সদর হাসপাতালটি একশো শয্যা থেকে আড়াইশো শয্যার সাততলা ভবনে উন্নীত করা হয়। নির্মাণ শেষে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর স্বাস্থ্য  বিভাগের কাছে নতুন ভবনটি হস্তান্তর করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। ভবন হস্তান্তরের সাড়ে তিন বছর পর আংশিকভাবে ৫০ শয্যা বাড়িয়ে নতুন ভবনের উদ্বোধন হলো।

গত ১৪ নভেম্বর উচ্চ আদালতের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ দেন সুপীম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল আশিক। এরপর হাসপাতালটি চালু না হওয়ার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী দ্বৈত বেঞ্চ আগামী দুই মাসের মধ্যে আদালতকে হাসপাতালটি চালু না হওয়ার কারণ জানাতে নির্দেশ দেন।

সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমেদ খান এর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, পুলিশ সুপার মো: মাসুদ আলম, সাবেক পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম চৌধুরী বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান খান, সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান হাওলাদার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ শাখাওয়াত সেলিম প্রমুখ।

সদর হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানা গেছে, নতুন ভবনে সংযুক্ত করা হয় তিন কোটি টাকার সিটি স্ক্যান মেশিন, ডিজিটাল এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ১০টি কার্ডিয়াক মনিটরসহ কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি।

এর আগেও আড়াইশো শয্যার সদর হাসপাতালটি চালুর দাবিতে মানববন্ধন, প্রতীকি অনশন ও গণস্বাক্ষরের আয়োজন করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে পর্যপ্ত জনবল না থাকায় হাসপাতালটি চালু করা প্রায় অসম্ভব ছিল। সবশেষ অস্থায়ী ভিত্তিতে কিছু জনবল নিয়োগ দিয়ে হাসপাতালটি আংশিক চালু উদ্যোগ নেওয়া হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান বলেন, ‘আমাদের আগেই একশ শয্যার হাসপাতাল ছিল। এখন আমারা মোট ২৫০ শয্যার হাসপাতাল উদ্বোধন করলাম। কিন্তু লোকবলের কারণে আমরা ৫০ শয্যার কার্যক্রম করতে পারবো। সব মিলিয়ে মোট ১৫০ শয্যার কার্যক্রম এইখানে পরিচালিত হবে। আগামীতে লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে পরিপূর্ণ ভাবে ২৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু করা হবে।’

সুপীম কোর্টের আইনজীবী আবদল্লাহ আল আশিক বলেন, ‘আমরা আংশিক উদ্বোধন চাইনি। পুরোপুরি চালু না হলে সাধারণ মানুষ তার চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। তাই দাবী জানাই দ্রæতই সম্পূর্ণ হাসপাতাল চালু
হোক।’

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মুনীর আহম্মেদ খান বলেন, ‘আড়াইশ শয্যার নতুন ভবনে করোনা রোগীদের চিকিৎসা ও টিকা দেওয়ার কার্যক্রম করা হয়েছে। তবে এখন আর করোনা রোগীর চাপ নেই। আগের একশ শয্যার হাসপাতালে দুর্ভোগ ছিল। রোগীরা শয্যা না পেলে ফ্লোরে বা নিচে চাদর পেতে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকতো। এর জন্য এলাকার জনগণের জোড় দাবি ছিল, যেন নতুন ভবনটি দ্রুত চালু হয়। তাদের দাবির কারণেই, আমরা আংশিকভাবে হলেও হাসপালটি চালুর উদ্যোগ হাতে নেই। আশা করছি, এখন থেকে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম আগে থেকে সহজ হবে।’

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমরা হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর লক্ষ্যে সবধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। মূলত জনবল নিয়োগের জন্য কয়েকটি মন্ত্রনালয় জড়িত রয়েছে, তাই একটু দেরি হচ্ছে।’
যাযাদি/ এম