খাগড়াছড়িতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পাহাড়ি নারীদের বাজার 

প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:২৯

খাগড়াছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

খাগড়াছড়ির মধুপুর স্বর্নিভর, আড়াইমাইলসহ বিভিন্ন স্থানে  জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পাহাড়ি নারীদের তাজা ও ভেজালমুক্ত সবজির বাজার। পাহাড়ের উৎপাদিত  তাজা ফলমূল আর ভেজালমুক্ত সবজির বাজার হিসেবেও ক্রেতাদের কাছে বিশেষভাবে পরিচিত। এখানকার বিক্রেতাদের মধ্যে হাতেগোনা দু'চারজন পুরুষ ছাড়া সবাই নারী।

পাহাড়ি দরিদ্র নারীরাই এ বাজারের বিক্রেতা। শুধু শাক-সবজি বিক্রি করেন তাঁরা। মৌসুমের সময় বিক্রি হয় জুমে উৎপাদিত নানান ধরনের সবজি। এছাড়া সারা বছরই এখানে পাওয়া যায় প্রকৃতি থেকে আহরিত নানান ফল আর শাক-সবজি। 

মূলত হতদরিদ্র নারীরা সংসারের টানাপোড়েন সমস্যা কমাতে প্রকৃতি থেকে সবজি সংগ্রহ করে এ বাজারে নিয়ে আসেন বিক্রয়ের জন্য। আর এসব সবজি কীটনাশক, রাসায়নিক এবং ফরমালিনমুক্ত বলে তাজা এবং ভেজালমুক্ত সবজি ক্রেতারাই প্রতিদিন বিকেলে এ বাজারে ভিড় জামান।

খাগড়াছড়িতে প্রতি বৃহস্পতিবার ও সোমবার সাপ্তাহিক হাটবার এদিনে পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে উৎপাদিত জুমে চাষ করা ফলমূল আর বন জঙ্গল থেকে আহরণ করা তাজা সবজি বিক্রি হয়। এছাড়াও পাহাড়ী নারীরা খাল-বিল বা প্রকৃতি থেকে কুচিয়া, শামুক আহরণ করে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসে। 

এছাড়াও মাশরুম জনপ্রিয় খাদ্য বিধায় তারা এসব সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করতে আনে। মুহুর্তের মধ্যেই এসব বিক্রি হয় যায়। বাজারের দিন ছাড়াও প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কের পাশে এসব ফরমালিনমুক্ত পণ্য বিক্রি করেন তারা। এসব বিক্রির আয় দিয়েই তাদের সংসার চলে। 

এই বাজারে বিক্রি হওয়ায় সবজির মধ্যে রয়েছে বাঁশকোরল, কচুশাক, পালংশাক, ঢেঁকিশাক, কচুরলতি, কচু, কাঁচা-পাকা পেঁপে, থানকুনি পাতা, লেটুস পাতা, কাঁচা কলা, কলার মোচা, মারফা, খাকরুম, বড়ই, খিরা, ভুট্রা ইত্যাদি। এগুলোর অধিকাংশই বন থেকে সংগ্রহ করা শাক-শবজি।

সবজি কিনতে আসা সুভাষতম চাকমা ও রিতা চাকমা  বলেন, পাহাড়ী নারীদের কাছ থেকে আমরা সহজে টাটকা সবজি কিনতে পারি। এখান থেকে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় মতো ভেজালমুক্ত শাক-সবজি কিনে নিয়ে যাই। সবজি সংগ্রহের জন্য দুর্গম পাহাড়ের মেঠো পথ পাড়ি দেওয়া খুবই কষ্টের হলেও সংসার চালাতে নারীদের এ কাজটি তারা বেশ স্বাচ্ছন্দ্য ই করেৃ থাকেন। 

সবজি বিক্রেতা লাব্রেচাই মারমা ও ম্রাচো মারমা বলেন, সারা দিন প্রকৃতি থেকে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি সংগ্রহ করে বিকেলে এ বাজারে বিক্রি করি। দৈনিক ২০০থেকে ৩০০টাকা সবজি বিক্রি করতে পারি। এ টাকা দিয়েই আমাদের সংসার চলে। আমার পরিবারের  সবাই এভাবেই চলছি সারা বছর। 

খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন সার ও কীটনাশক ওফরমালিন মুক্ত শাকন শবজি সবাই পছন্দ করে আমিও এর ব্যাতিক্রম নই। ডাঃ আশুতোষ চাকমা বলেন কীটনাশক আর সার ব্যবহার করা শাক-সবজি ফল মুল  স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর।
যাযাদি/ এম