“এখন আমারে আর অন্যের বাড়িতে ভাড়ায় থাকতে হয় না”

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২৩, ২০:০৫

চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি

ছোট্ট বয়সের তুন মাইনষের বাড়িতে ভাড়ায় আছিলাম।  নিজেদের কোন জায়গা জমিন আছিল না, বউ, পোলাপাইন লই অন্যের বাড়িতে আছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একখান ঘর ও দুই শতক জায়গা পাইয়া পরিবার নিয়া মাথা গোজার ঠাঁই হইছে। আমার নামে দলিল হইছে, খারিজ হইছে, দালান ঘর পাইছি। এ বয়সে এসে জমির মালিক হইব স্বপ্নেও ভাবি নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই ঋন কখনো পুরন  হইত না। আজ আমি ও আমার পরিবার অনেক খুঁশি।  ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে জমি ও ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপের অবশিষ্ট ও চতুর্থ ধাপের নবনির্মিত ঘরসহ মোট ১২৪ টি ঘর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

এ উপলক্ষ্যে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাকা ঘর, জমিন ও কাগজপত্র বুঝে পেয়ে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেন চৌদ্দগ্রামের উজিরপুর ইউনিয়নের ৭০ উর্ধ্ব  বৃদ্ধ হুমায়ুন কবির। এ সময় তিনি চৌদ্দগ্রামকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রশাসন উপকারভোগিদের মাঝে ঘরের কবুলিয়তনামা দলিল ও চাবি হস্তান্তর করেন।

বুধবার (২২ মার্চ) বেলা ১১টায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেনের সভাপতিত্বে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খাঁন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান ভূঁইয়া হাসান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আক্তার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তমালিকা পাল, চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. গোলাম কিবরিয়া টিপু, ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি মাহবুব হোসেন মজুমদার, মোশারেফ হোসেন, আবু তাহের, এ কে খোকন, কাজী ফখরুল আলম ফরহাদ।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম মীর হোসেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেফাউল আলম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ভূঁইয়া মোহাম্মদ শাহিনুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুব্রত রায়, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বীথি রানী চক্রবর্তীসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাবৃন্দ, উপকারভোগি পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উল্লেখ্য, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় প্রথম তিন ধাপে মোট ৩২০ টি এবং চতুর্থ ধাপে ১২৪ টি পরিবারসহ সর্বমোট ৪৪৪ টি  ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছে। চতুর্থ ধাপের ১২৪ টি ঘরের মধ্যে উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নে ২০টি, উজিরপুরে ৮টি, কালিকাপুরে ১৩টি, শ্রীপুরে ৭টি, শুভপুরে ২০টি, ঘোলপাশায় ৫টি, মুন্সীরহাটে ৫টি, বাতিসায় ১৫টি, চিওড়ায় ১১টি, জগন্নাথদীঘিতে ৭টি, গুনবতীতে ৩টি ও আলকরা ইউনিয়নে ১০টি ঘর উপকারভোগিদের মাঝে প্রদান করা হয়।


যাযাদি/এসএস