“পাকা রাস্তা হবে শুনতে শুনতেই বুড়ো হয়ে গেছি”

প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২৩, ১১:৫৮

রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

বর্ষার সময় কাঁচা রাস্তায় চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। করিমপুর থেকে শ্রমিকরা পায়ে হেটে কাজে যেতে হয়। ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে আমাদের দূরের পথ হেটে কাজে যেতে হয়। রাস্তা পাকা হবে এই কথা শুনতে শুনতে আমি বুড়ো হয়ে গেছি। ইন্দেশ্বর ফাঁড়ি বাগানের করিমপুর-ইন্দেশ্বর রাস্তায় দাঁড়িয়ে এমন কথা বলছিলেন মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ইন্দেশ্বর চা বাগানের নারী চা শ্রমিক পাপামা নাইডু।
শ্রমিকরা জানান, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কুলাউড়া উপজেলার লুয়াইনি হতে করিমপুর ইন্দেশ্বর হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তাটি কাচা রয়ে গেছে। 

বিভিন্ন সময় এমপি-মন্ত্রীরা আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কোনো সরকারের আমলেই রাস্তাটি পাকা করা হয়নি। এমনকি ইট সলিং পর্যন্তও করা হয়নি। বর্ষাকালে কাদা মাড়িয়েই চা শ্রমিকদের সন্তানরা অনেক দূরের স্কুলে লেখাপড়া করতে যায়। তবু এই রাস্তার দিকে নজর পড়ে না কারো। বাগানের চা শ্রমিক শিশুদের লেখাপড়ার জন্য একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি বলে দাবি করেন শ্রমিকরা।
এসব দাবীতে রবিবার (২৬ মার্চ) বেলা ১টার দিকে ইন্দেশ্বর ফাঁড়ি বাগানের কয়েক শত চা শ্রমিক রাস্তায় মানববন্ধন করেছেন।

বাগানের শ্রমিক মাখন রিকমন বলেন, সরকার দেশে এতো এতো উন্নয়ন করেছে দেখি। কিন্তু আমাদের একশো বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস্তাটি কাচা রয়ে গেল। কতো এমপি-মন্ত্রীর কাছে রাস্তাটি পাকা করার জন্য বাগানের লোকজন গেছে। সবাই শুধু আশ্বাস দেয়। কাজের কাজ কিছু হয় না। আরেক চা শ্রমিক সুজন পাল  বলেন, বর্ষাকালে এই রাস্তা চলাচলের যোগ্য থাকে না। তখন আমাদের শ্রমিকরা দুর্ভোগ পোহায়, স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারেনা, নারী শ্রমিকদের কাজে যেতে কষ্ট হয়। মানববন্ধনে যোগ দিয়ে চা শ্রমিক শিশু অর্চি নাইডু বলে, বাগানে আমরা একটা সরকারি স্কুল চাই। আমাদের এখান থেকে সরকারি স্কুল অনেক দূরে, আমরা যেতে পারিনা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল আহমদ  বলেন, আমাদের একটাই দাবী আগামী নির্বাচনের আগে রাস্তা পাকা করা হোক। প্রতি নির্বাচনের আগে এমপিরা আশ্বাস দেন, কিন্তু নির্বাচনের পরে আর কারো খোঁজ পাওয়া যায় না। বাগানের সহস্রাধিক শ্রমিক কাদার কারণে বর্ষাকালে কষ্টে চলাচল করেন।

যাযাদি/ এস