ক্রয়ের ৪৮ বছর পরেও জমি বুঝে পাননি বীরমুক্তিযোদ্ধা পরিবার!

প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২৩, ২০:৩৬

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

স্বাধীনতার পর পরই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলিলে ১ একর ৪৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ আক্কাচ আলী ও মোছা. আমেনা খাতুন দম্পতি। ওই দম্পতি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল হক এবং ৩ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ আজিজুল হকের বাবা-মা। ক্রয়কৃত জমির মধ্যে বিএস ৪২০০ দাগের জমি রেকর্ড হওয়া সত্বেও ৬ শতাংশ, ৪১৯৮ দাগের ৬ শতাংশ, ৪১৯৯ দাগের ৮ শতাংশ এবং ৪১৯৬ দাগের ৩ শতাংশ মোট ২৩ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দিলেও তার দখল বুঝে দেননি জমির মালিকগণ। ওই জমি পরবর্তীতে শেখ আক্কাচ আলী ও মোছা. আমেনা খাতুনের নামে রেকর্ড হলেও বাবা আক্কাচ আলীর মৃত্যুর ৩৬ বছর পরেও জমির মালিকানা বুঝে পাননি বোয়ালমারী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল হক ও ৩ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শেখ আজিজুল হক গং।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শেখ আক্কাচ আলী ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলিলে বোয়ালমারী ওয়াপদা মোড়ের দক্ষিণ পাশের কামারগ্রাম মৌজার ১২০৪, ১২০৬, ১২০৭, ১২০৮, ১২০৯  নং দাগের ১ একর ৪৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন জর্জ একাডেমির উত্তর পাশের বাসিন্দা লুৎফর রহমান ওরফে লাল মিয়ার ওয়ারিশগণের নিকট থেকে। ওই সমস্ত জমির ওয়ারিশগণ হলেন- লুৎফর রহমান ওরফে লাল মিয়ার ছেলে শহিদুল আলম, নুরুল আলম, খসরুর আলম, ফারুক আলম, মেয়ে ডলি পারভীন, সাহিদা বেগম, খসরুর আলমের সৎ ভাই লিপু, লাভলু এবং সৎ মা সুফিয়ান।

ক্রয়কৃত জমির মধ্যে ৪২০০ দাগের ৬ শতাংশ, ৪১৯৮ দাগের ৬ শতাংশ, ৪১৯৯ দাগের ৮ শতাংশ এবং ৪১৯৬ দাগের ৩ শতাংশ মোট ২৩ শতাংশ জমি বিক্রির পরেও জোরপূর্বক লুৎফর রহমান ওরফে লাল মিয়ার ওয়ারিশগণ দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ।

এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল হক। এত সবের পরেও জমি ক্রয়ের ৪৮ বছর পরেও মালিকানা বুঝে পাননি ক্রয়কৃত জমির মালিক শেখ আক্কাচ আলীর ওয়ারিশগণ।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারী শেখ আতিকুল হক বলেন, ওয়াপদা মোড়ে যখন রোডস এন্ড হাইওয়ে রাস্তার জন্য জায়গা একোয়ার করে, তখন এসএ ১২০৭ দাগের ৭৭ শতাংশ জায়গার মধ্যে ১৪ শতাংশ এবং ১২০৮ দাগের ৪৮ শতাংশের মধ্যে ২৩ শতাংশ জায়গা রোডস এন্ড হাইওয়ে একোয়ার করে। একোয়ারকৃত জায়গার মধ্যে খসরুর আলম গংদেরও জায়গা ছিল এবং তারা একোয়ারকৃত জায়গার প্রাপ্য টাকাও গ্রহণ করেছে। তারপরও আমাদের জায়গা দখল করে রেখেছে। খসরুর আলমের ছেলে এনায়েত হোসেন রাজন, সুমন মিয়া, মোহন এবং ইমন গংরা অবৈধভাবে জায়গা দখল করে রেখেছে। তিনি আরো বলেন, হাল রেকর্ড আমার আম্মা আমেনা খাতুনের নামে হয়েছে। তবে খসরুর আলম আবু মিয়া তার অংশের জমি বিক্রি করার পরেও অবৈধভাবে রেকর্ড করে আমাদের জমির মালিকানা দাবি করছেন। তিনি আরো বলেন, আবু মিয়া গংদের ওয়ারিশগণ তাদের প্রাপ্যর বেশি জমি বিক্রি করার পরেও আমাদের জমি দখল করে রেখেছে।

এ ব্যাপারে আবু মিয়ার স্ত্রী রুবিয়া বেগম এবং তার ছেলে ইমন জানান, কাউন্সিলর শেখ আতিকুল হকের বাবা তাদের (আবু মিয়া) নিকট থেকে যতটুকু জমি কিনেছিলেন তার সমুদয় জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়া হয়েছে। তারা আরো জানান, আতিকুল হক কাউন্সিলরের বাবা-মা আবু মিয়ার ভাই-বোনেদের জমিও কিনেছেন। তারা (আবু মিয়ার ভাই-বোন) তাদের প্রাপ্য অংশের থেকে বেশি জমি বিক্রি করে থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাদের লিখে দিতে পারার কথা না। আর সে দায় আবু মিয়ার পরিবার নেবে না। আবু মিয়া জমি বিক্রির পর জমি বুঝে দেয়নি কিংবা বিক্রির পর দলিল না করে দিয়ে তার স্ত্রী-সন্তানেরা জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে- এমন কথা সত্য নয়।