পুরোপুরি বাণিজ্যিক উৎপাদনে বাঁশখালীর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:১৮

রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী গণ্ডামারা ইউনিয়নে নির্মিত এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট (১৩২০ মেগাওয়াট) কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট সফলভাবে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা ১ মিনিট এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের একটি ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) পূর্ণ সক্ষমতায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের কার্যক্রম শুরু হয়। সরবরাহের আগে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর কর্মকর্তারা এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন।

এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট সু্ত্রে জানা যায়, রোববার রাত ১২টা ১ মিনিট বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারায় নির্মিত এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের একটি ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) পুরোপুরি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। এরপর থেকে ধারাবাহিক ভাবে এটি চলমান রয়েছে। যথারীতি আগামী ১ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করবে।

এদিকে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এই কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াট করে মোট (১৩২০ মেগাওয়াট) এর দুইটি ইউনিট রয়েছে। যেটির প্রথম ইউনিট থেকে চলতি বছরের ২৪ মে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে। এরপর ২৮ জুন থেকে দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।

এ বিষয়ে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মো. ইবাদত হোসেন ভূঁইয়া জানান, ‘রোববার রাত ১২টা ১ মিনিট এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের একটি ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) পূর্ণ সক্ষমতায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের কার্যক্রম শুরু করে। সরবরাহের আগে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর কর্মকর্তারা পাওয়ার প্ল্যান্টটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন। বাঁশখালীর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের বাণিজ্যিক উৎপাদন আমাদের জন্য এক মহা সাফল্য। এটি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এদিকে আগামী ১ মাসের মধ্যেই দ্বিতীয় ইউনিটও বানিজ্যিক উৎপাদনে আসবে।'

জানা যায়, বাঁশখালীর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি বেসরকারি ভাবে নির্মিত কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প। ২.৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার বা ২৮ হাজার কোটিরও বেশি ব্যয়ে নির্মিত এই এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি বেসরকারি একক বিনিয়োগ হিসেবে দেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। প্রকল্পটিতে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস. আলমের অংশীদারিত্বের পরিমাণ ৭০ শতাংশ এবং বাকি ৩০ শতাংশের মালিকানায় রয়েছে চীনা কোম্পানি সেপকো থ্রি। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরোপুরি উৎপাদনে থাকলে দৈনিক প্রায় ২.৯৩ কোটি ইউনিট ও মাসে প্রায় ৮৮ কোটি ইউনিটের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। এতে ইউনিট প্রতি ১২ টাকা হারে সাশ্রয় ধরলেও বছরে সরকারের সাশ্রয় হবে ১১৪০ কোটি টাকার উপরে।

ইতোমধ্যেই প্রকল্পটি থেকে ট্যাক্স, ভ্যাট ও অন্যান্য ফি বাবদ প্রায় ১৩’শ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। দেশের ভেতর থেকে ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা কেনা হয়েছে। শুধু তাই নয়, করোনার মহাসংকটের সময় যখন দেশে কর্মসংস্থান সংকট তৈরি হচ্ছিল, তখনই টানা ৪ বছর ধরে ৭ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছিল এই প্রকল্পে। কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ চালু ১২’শ লোকের কর্মসংস্থান হবে।

উল্লেখ্য: বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের মধ্যে চুক্তি সইয়ের পর ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের কার্যক্রম যৌথভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং।

 

 

যাযাদি/এসএস