একই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ৪১ বছরে অবসরে শিক্ষক মীরা রাণী ভৌমিক

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:২৯

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের মিরসরাই অঞ্চলের সফল একজন শিক্ষক মীরা রাণী ভৌমিক । সহকর্মীদের বন্ধুখ্যাত যুগপৎ শ্রদ্ধার পাত্র মীরা রাণী ভৌমিক মিঠাছড়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ৪১ বছর সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

সোমবার (২ অক্টোবর) শিক্ষকতা জীবনের অবসর উপলক্ষে স্থানীয় মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় মিলনাতায়নে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোসলেহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে ছিলেন মিরসরাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম ফজলুল হক, মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন, মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এমরান উদ্দিন, মিঠাছড়া বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এম সাইফুল্যাহ দিদার, মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামশেদ আলম,মিঠাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র মিরসরাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসন মিঠু প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মিঠাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল করিম।

জানা যায়, মীরা রাণী ভৌমিক ১৯৮২ সালের ২৯ জানুয়ারি উপজেলার মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রথম চাকরিতে যোগদান করেন। ৪ মাস পর ১৯৮২ সালের ৩০ মে মিঠাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন । এই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ২৫ জুন ২০২৩ দীর্ঘ ৪১ বছরের শিক্ষককতা জীবনের ইতি টানেন। শিক্ষকতা জীবনে তাঁর অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আজ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সফলতার সাক্ষর রেখেছেন।

একই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ৪১ বছরের কর্মজীবনের শেষ দিন বিদায় বেলায় সকলের মাঝে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সহকর্মী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং অফিস সহকারী সকলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।   শিক্ষার্থীদের একবার একেকজনের মাথায় বুলিয়ে দিচ্ছেন শান্তনার হাত। যে হাতের নিভৃত ভাষা ছিল ‘আমি আছি তোদের হৃদয়ে তোদের শ্রদ্ধায় তোদের ভালোবাসায়’।

মিঠাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এনায়েত হোসেন মিঠু বলেন, ‘তাঁর বিদায়ী সময় খুবই ব্যথিত। স্যারের সুনাম উপজেলা জুড়ে রয়েছে। উনার অবসর সময় ভালো কাটুক। আমি উনার হাত ধরেই এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করি। আমার সন্তানও মীরা স্যারের হাত ধরে তার শিক্ষা জীবন শুরু করে। এটি আমার জন্য বিশাল একটি পাওনা।

বিদায়ী সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মীরা রাণী ভৌমিক , ‘ কেবল পুথিঁগত বিদ্যা নয়, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও উৎকর্ষতা বিকাশের মাধ্যমে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টেকসই হয়ে থাকে। এই বিদায় আমাকে বাকরুদ্ধ করেছে শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও অভিভাবকদের আন্তরিকতা আর অশ্রুসজল চোখে’।

যাযাদি/ এম