নিয়ামতপুরে রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টরের ব্যক্তি স্বার্থ ও উদাসিনতায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ বন্ধ

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৫:২০

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

আজ মঙ্গলবার সকালে আমরা উপজেলার ৩০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তিন দিনের ট্রেনিং নিতে আসি উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে। কিন্তু রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর তমা চৌধুরীর ব্যক্তি স্বার্থ ও উদাসীনতায় ট্রেনিং বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষা অফিসার ৩০ জন শিক্ষক ও দুইজন ট্রেনারের নাম উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে পাঠান। কিন্তু আজকে ইন্সট্রাক্টর তমা চৌধুরী নিজের স্বার্থের জন্য ট্রেনিং বন্ধ করে দেন। আমাদের দেওয়া হয়নি কোন হাজিরার খাতা, শিক্ষা অফিস থেকেও দেয়া হয়নি কোন নির্দেশনা। ট্রেনিং হবে না জানালে আমরা স্কুলেই সময় দিতে পারতাম। এমন উদাসীনতা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কথাগুলো বলছিলেন ভাদরন্ড-লক্ষীতাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হক। 

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপজেলা পর্যায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের তিন দিনব্যাপী শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৩০ জন করে মোট ১৯ ব্যাচে অংশগ্রহণ করবেন শিক্ষকেরা। আজ ৪র্থ ব্যাচে এসে সমস্যা তৈরি হয়েছে। শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী একজন প্রশিক্ষক একাধারে দুটির বেশি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর পর পর তিনটি প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ৪র্থ ব্যাচে তিনিই ট্রেনিং করাতে পারছেন না বলেই ট্রেনিং বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় ট্রেনিং কেন বন্ধ হলো তার কোন সদুত্তর দেননি তিনি। 

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকরা ট্রেনিং সেন্টারে উপস্থিত থাকেলও ছিলেন না ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর তমা চৌধুরী। শিক্ষকরা কবিতা আবৃতি, গান গেয়ে সময় পার করছিলেন। প্রতিবেদক তমা চৌধুরীকে ফোন দিলে কিছুক্ষণ পর অফিসে আসলে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, এই ট্রেনিংয়ে মোট দুজন প্রশিক্ষক থাকবেন। কিন্তু শিক্ষা অফিসার দুজন প্রশিক্ষক নিজে থেকে দেওয়ার কারণেই ট্রেনিং বন্ধ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা অফিস থেকে একজন ও ইউআরসি থেকে আরেকজন প্রশিক্ষক থাকবে। শিক্ষা অফিস নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটানোয় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত তিনটি প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ট্রেনিংয়ের বরাদ্দ জনপ্রতি ৬ হাজার ৪শ ১৯ টাকা থাকলেও ট্রেনিং শেষে একটি ব্যাগ ও ২ হাজার ৮শ কুড়ি টাকা প্রদান করে ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর। ট্রেনিংও তিনি ছিলেন উদাসীন। 

উপজেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল আলম প্রতিবেদকে বলেন, বিধি মোতাবেক একজন প্রশিক্ষক পর পর দুই ব্যাচের অধিক প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। ইতিমধ্যে ৩টি ব্যাচের দায়িত্ব পালন করেছে ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর। এ কারণে বিধি মোতাবেক চর্তুথ ব্যাচের প্রশিক্ষক নেওয়া হয় দুই জন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারকে। ইউআরসির এমন কার্যকলাপে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশিক্ষণে ব্যাঘাত ঘটেছে, শিক্ষকদের মাঝে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। এ বিষয়ে আমার উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। বিধি মোতাবেক প্রশিক্ষন পরিচালিত হবে। প্রশিক্ষণ কেন বন্ধ হলো তা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।

যাযাদি/ এসএম