ভোট চুরির প্রকল্প শেখ হাসিনার একমাত্র ভরসা: ফরিদপুরে আমির খসরু

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:১৮

ফরিদপুর প্রতিনিধি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশে-বিদেশে কেউ আর এই সরকারের পাশে নেই। ভোট চুরির প্রকল্প এই সরকারের একমাত্র ভরসা। আপনারা তাই চোখকান খোলা রাখবেন। কারা এই ভোট চুরি প্রকল্পে জড়িত তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে রাখবেন। বিএনপির বিভাগীয় রোডমার্চ উপলক্ষে  মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে (বঙ্গবন্ধু স্কয়ার) অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী একথা বলেন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রাস্তাঘাটে যেখানেই যাই সকলেই জানতে চায় এই সরকার আর কয়দিন আছে? সবার প্রত্যাশা এই সরকার কবে যাবে? বিশ্বের যত দেশ আছে, যত গণতন্ত্রের সংগঠন আছে, যত গণ অধিকার সংগঠন আছে তারাও সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে। এই সরকারের সাথে কেউ নেই। দেশেও নাই, বিদেশেও নাই। তাই ভোট চুরির প্রকল্প শেখ হাসিনার একমাত্র ভরসা। তার এই প্রজেক্টে আছে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, দুর্নীতিবাজ পুলিশ, দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ী। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জীবনের বিনিময়ে হলেও এদের প্রতিরোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, এই সরকারকে আমেরিকা ভিসা স্যাংসন দিয়েছে তাতেই তাদের কম্পন শুরু হয়ে গেছে। এরপর বাংলাদেশের মানুষের যে ভিসানীতি আসবে সেটি আরো কঠিন হবে। এখানে মাফ পাওয়ার সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, ভোট চুরির প্রকল্প শেখ হাসিনার একমাত্র ভরসা। তার এই প্রজেক্টে আছে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, দুর্নীতিবাজ পুলিশ, দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ী। আপনারা সবাই চোখকান খোলা রাখবেন। এই ভোটচুরির সাথে কারা জড়িত। তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে রাখবেন। আমরা এই ভোট চোরদের তালিকা প্রকাশ করে দেবো।

তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এদেশে এসে ঘুরে গেছে। তারা বলেছে এখানে সুষ্ঠ নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই তাই তারা নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবেনা। বিদেশীরা যেটা বলেছে তার সাথে আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পুরো মিলে গেছে। ভিসা নীতিতে তাদের কম্পন শুরু হয়ে গেছে। এখন উপর দিয়ে তারা গলাবাজি করছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা ভোট চুরির সাথে থাকবে তাদের কেউই ভিসানীতি থেকে বাদ যাবেনা। বিচারপতি এমনকি যেই সমস্ত গণমাধ্যম এই সরকারের ভোট চুরির সাথে থাকবে তারাও এই ভিসা নীতির আওতায় পড়বে। তারা সবাই বাংলাদেশের শক্র।

তিনি বলেন, দুনিয়াতে কোন ফ্যাসিস্ট সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নাই। তাদের রাস্তায় নেমে হটাতে হবে। আমরা এখনো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছি। যদি কোন অপশক্তি নামিয়ে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়া হবে তখন প্রতিরোধ করবো। প্রতিরোধ করা ছাড়া আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পাবোনা। জীবন দিয়ে আমাদের জয়লাভ করতে হবে। 

সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির এক দফা দাবিতে সারাদেশের বিভাগীয় রোডমার্চের অংশ হিসেবে বেলা ১১ টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে এ রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। পথিমধ্যে বসন্তপুরে সমাবেশ করে ফরিদপুরে পৌছে রোড মার্চটি দুপুর দুই টার দিকে।

বিএনপি চেয়ারপারর্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাদা মিয়া, সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. আবু জাফর, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদাররেস আলী ঈসা, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ আহমেদ প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একে কিবরিয়া স্বপন ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ।

এসময় মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে মহানগর বিএনপির মহানগর আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গী, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাহবুবুল হাসান ভুঁইয়া পিংকু সহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদপুরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে সমাবেশ শেষে রোডমাচ তালমা মোড়, গোপালগঞ্জের রাজৈরের বরইতলা মোড় ও মাদারীপুরের মোস্তফাপুর মোড়ে জনসভা শেষে শরীয়তপুর স্টেডিয়ামে পৌছে শেষ হওয়ার কথা। 

যাযাদি/ এম