জাজিরায় প্রার্থীতা নিয়ে চরম নাটকে ভোট উৎসব থেকে বঞ্চিত ভোটাররা
প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:১৬
শরীয়তপুর সদর তথা পালং এবং পদ্মাসেতু হয়ে দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশদ্বারখ্যাত সম্ভাবনার জাজিরা নিয়ে গঠিত শরীয়তপুর-১ আসনে নির্বাচনের জন্য আওয়ামিলীগের মনোনয়ন পেয়ে অনেকটা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ই নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ এর সদস্য এবং বর্তমান সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু। কারণ আওয়ামিলীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিত এই আসনটিতে (৩০ অক্টোবর) শেষদিন পর্যন্ত তার বিপক্ষে হেভিওয়েট বা উল্লেখযোগ্য কেউ প্রার্থী হননি।
তবে এই আসনে অখ্যাত দুটি দলের দু'জন প্রার্থীর পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য ভোটার বিহীন জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন এ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান এবং জাকের পার্টি থেকে দেলোয়ার হোসেন। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন এর আগে জাজিরার নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা। তবে তাদের প্রার্থীতাকে অতটা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে না নেয়ায় সাধারণ ভোটারদের একাংশের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করছে।
এর কারণ হচ্ছে এই আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ১৯ জন। যার মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং এই আসনের দুইবারের সাবেক সাংসদ বিএম মোজাম্মেল হক, একবার নৌকাসহ দুইবার এই আসনে নির্বাচন করা বর্তমান জাজিরা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোবারক আলী শিকদার, সাবেক সাংসদ মাষ্টার মজিবুর রহমান এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল আলিম বেপারি।
মনোনয়ন বঞ্চিত এদের মধ্যে কয়েকজনের বিষয়ে বেশ গুঞ্জন ছিলো স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার। এমনকি বর্তমান জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোবারক আলী শিকদার এবং বিএম মোজাম্মেল হক এর পক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তও জানানো হয়েছিলো কয়েকবার।
এছাড়াও আলহাজ্ব আব্দুল আলিম বেপারি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করে ফরমও সংগ্রহ করেছিলেন। যার ফলে উৎসব মূখর একটি ভোট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিলো পালং-জাজিরায়।
তবে সকাল-বিকাল সিদ্ধান্ত পরিবর্তন এবং সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এদের মধ্যে থেকে কেউই হননি স্বতন্ত্র প্রার্থী। এমনকি বুধবার থেকেই নিজের মুঠোফোন বন্ধ রেখেছেন আলহাজ্ব মোবারক আলী শিকদার। তবে এর আগে তিনি প্রার্থীতা করার জন্য প্রস্তুত, কিন্তু বিএম মোজাম্মেল হক এর বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে তিনিও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আলহাজ্ব আব্দুল আলিম বেপারির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনিও সাবেক সাংসদ বিএম মোজাম্মেল হক এর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বারবার তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার ফলে আমরা একাধিক প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রার্থীতা করতে পারলামনা। এমনকি সবশেষ বৃহস্পতিবার সকালে বিএম মোজাম্মেল হক জাজিরায় এসে নির্বাচনী ফরম জমা দিবেন বলে জানিয়েছিলেন।
সকাল থেকে তাকে সমর্থনকারী নেতা-কর্মীরা এবং গণমাধ্যম কর্মীদের অনেকেই শরীয়তপুর জেলা নির্বাচন অফিস এলাকা এবং জাজিরা উপজেলা পরিষদ এলাকায় আসলেও শেষমেশ তিনি আসবেননা বলে জানান তার পিএস সোহেল ভুইয়া। যার ফলে হতাশ হয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার বিরুদ্ধে। এমনকি তার সসমর্থকদের মধ্যে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করছেন।
এ বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। যার ফলে তার কোন প্রতিক্রিয়াও পাওয়া যায়নি। তবে বর্তমান একক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, আমি মানুষের চিন্তার পরিবর্তন আনার জন্য প্রার্থীতা করি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রার্থী হইনি। ভেবছিলাম তারা কেউ আসলে নির্বাচন যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।
জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী এ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান জয়ের আশাবাদ ব্যাক্ত করে জানান, আমি জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি এবং আশা করি ভালো কিছু হবে। আওয়ামিলীগের প্রার্থী সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দ্বিতীয় বারের মতো নৌকা দিয়ে পাঠিয়েছেন নির্বাচন করার লক্ষ্যে। ইনশাআল্লাহ আমি জনগনের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে শক্তিশালী করবো।
যাযাদি/ এম