চেয়ারম্যানের পেটে জেলেদের চাল ঢুকার অভিযোগ 

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:২৮

হাফিজ লিটন ইসলামপুর (জামালপুর) থেকে

নদীর পাড়ে বসবাস। রোদ বৃষ্টি অপেক্ষা না করে মাছ ধরে বিক্রি করে-ই চলে এদের জীবন সংসার। তাই মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা কালীন সময়ের কথা ভেবে জেলে পরিবারের জন্য চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। সেই বরাদ্দকৃত চাল জেলেদের না দিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, সারা দেশের ন্যায় জামালপুরের ইসলামপুরে গত ১৮ অক্টোবর থেকে ২শরা নভেম্বর পর্যন্ত নদীতে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞাকালিন সময়ে উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের ২শত ৩৫  জন জেলে পরিবারের জন্য বিগত বছরের মতো এ বছরও প্রতি জেলে পরিবারে জন্য ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে  ওই ইউনিয়নের নিবন্ধিত জেলের সুবিধাভোগীর নামের তালিকা থেকে বাদ পরে প্রায় অর্ধশত। ভুক্তভোগী ৮ জন জেলের নাম তালিকাই থাকলেও  জুটেনি তাদের কপালে চাল। প্রতিটি জেলে পরিবারের জন্য ২৫ কেজি করে চাল সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পেটে না চেয়ারম্যানের পেটে হদিস পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ তাদের। 

সরেজমিনে গেলে জেলে সর্দার আনোয়ার হোসেন বলেন আমরা গরীব মানুষ মাছ ধইরে খাই । সরকার নিষেধ করছিলো ৩০ দিন আমরা মাছ ধরি নাই। আমাদের প্রতিবছর চাল দিতো সরকার, এবছরও দিছে কিন্তু আমরা পাই নাই। এহন আমগো চাল  চেয়ারম্যানের পেটে ঢুইকে গেছে। চেয়ারম্যানের নিকট গেলে বলে এ বছর কম আইছে,সামনে বছর পাবা। আমাগো চাল আমরা চাই। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেন এই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম বাবুলের দুর্নীতির শেষ নেই, তিনি কাউকে তোয়া না করেননা, সবকিছু লুটপাট করে খাচ্ছেন। 

চাল বিতরণের সুবিধাভুগীর তালিকার ১৮৯ নং সিরিয়ালে পশ্চিম গামারিয়ার মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মালেক উদ্দিন, ২০২ সিরয়ালের আব্দুস সালাম, ২১৫ সিরিয়ালের শাহিন মিয়াসহ নিবন্ধিত একাধিক  এই গরিব অসহায় জেলেরা তাদের দেওয়া সরকারি বরাদ্দকৃত চাল ফেরৎ পেতে উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করে বলেন, সরকারের নিষেধ মেনে আমরা নদীতে মাছ ধরি নাই। প্রতি বছর চাল পাইছি এবার আমাগো চাল কোথায় গেলো। আমরা আমাদের চাল চাই। 

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইফতেখার আলম বাবুলের নিকট সুবিধাভোগী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত  জেলেদের বরাদ্দকৃত চাল সম্পর্কে জানতে একাধিকবার গিয়েও তাকে না পেয়ে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত যারা তারা হয়ত পরিষদে আসে নাই। চাল আমার গুদামে রয়েছে তাদেরকে বইলেন এসে নিয়ে যাইতে। 

দীর্ঘদিন আগে দেওয়া বরাদ্দকৃত চাল অসহায় জেলেরা না পাওয়ার  বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাবর ডিও ইস্যু করে দিয়েছিলাম। কেন তারা চাল পেলো না, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

স্থানীয় প্রশাসন কি ব্যবস্থা নিবে তা জেলেরা জানে না। তবে সরকারের দেওয়া প্রাপ্য চালে জেলেদের পরিবারের মুখে হাঁসি ফুটুক এমন প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

যাযাদি/ এস