আড়াইহাজারে হারিয়ে যাচ্ছে লাঙ্গল জোয়াল হালের বলদ

প্রকাশ | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:১৯

রফিকুল ইসলাম রানা, আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঐতিহ্যবাহী লাঙ্গল, জোয়াল আর হালের বলদ, সেই সাথে পুরাতন পদ্ধতিতে হালচাষ, মই দেয়া এবং জমি আঁচড়ানোর সকল প্রকার আসবাবপত্র হারিয়ে গেছে। কালের বিবর্তণে এখন আর সেই পুরানো পদ্ধতিতে হালচাষ করতে দেখা যায়না। 

উপজেলার সর্বত্র ঘুরে দেখা গেছে, সব জায়গায় এখন কলের লাঙ্গল দিয়ে হালাচাষ, মই দেয়া এবং জমি আঁচড়ানোর কাজ চলছে। মনে হচ্ছে নিড়ানির কাজটাও তারা যদি পারতো তা হলে কাস্তের পরিবর্তে যন্ত্র দিয়ে করে নিত। তা ছাড়া ধান ম্ড়াাইয়ের কাজ তো যান্ত্রিক ভাবেই করা হচ্ছে। 

এক সময় উপজেলার রামচন্দ্রদীতে শিকদার পরিবারের, নরিংদীতে বড়বাড়ীর, হাইজাদীর সিংহদীতে দইলতারবাড়ী, নারান্দীতে সোনালীর বাড়ী, কলাগাছিয়ায় কেমার বাড়ীর, জবার বাড়ী এ সমস্ত বাড়ী গুলো গৃহস্ত বাড়ী হিসেবে খুব নাম ডাক ছিল। এমন আরো নাম না জানা অনেক আদর্শ গৃহস্তবাড়ী উপজেলার আনাচে কানাচে রয়েছে যাদের কয়েক পাল করে হালের বলদ থাকতো। তারা কামলা নিয়ে দিনভর জমিতে হালচাষ করতো। কামলারা হালচাষের মধ্যে সুন্দর সুন্দর গলায় গান গাইতো। গানের তালে তালে চলতো একমনে তাদের গান গাওয়া। 

এ সব দৃশ্য এখন আর চোখে পড়েনা। ১৯৯৬ সালের শুরুর দিকে এলাকায় হালচাষের জন্য প্রথম ট্রাক্টর নামে ছোট একটি যন্ত্র এলাকায় আসে। এর পর থেকে এ যন্ত্রটি দিয়ে এলাকায় হালচাষ করা শুরু হয়। দেখতে দেখতে এ যন্ত্রটির প্রসার এলাকায় ব্যাপক ভাবে বেড়ে যায়। এ যন্ত্রটি দিয়ে একই সাথে হাল বাওয়া, জমিতে মই দেয়া, জমি আঁচড়ানোসহ বিভিন্ন রকম কাজ কর্ম করা শুরু হয়। এর পর থেকে ধীরে ধীরে হালচাষ, ধান মাড়ানো, ধান কাটা, ঘাস কাটা, ঘাস চুর্ণ করা এ সমস্ত কাজ কর্ম এখান মেশিনের সাহায্যে করা হচ্ছে। ফলে পুরাতন পদ্ধতিতে কৃষি কাজের জন্য ব্যবহার করা লাঙ্গল, জোয়াল, হালের বলদ, মই, আঁচড়া, কাস্তে, গরুর মুখের কাপাইর এ সমস্ত দ্রব্য গুলো কালের বিবর্তণে হারিয়ে গেছে। 

আড়াইহাজার উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ফারুক ভূঁইয়া জানান, আসলে সনাতন পদ্ধতিতে হাল চাষ করার চেয়ে আধুনিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে হাল চাষে সময় বাঁচে, টাকা বাঁচে এবং ফলন ভাল পাওয়া যায়। এক কথায় সব দিক দিয়ে আধুনিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে হালচাষ করা লাভজনক। তাই কৃষকেরা যান্ত্রিক পদ্ধতিটাকেই বেছে নিয়েছে।

যাযাদি/ এসএম