সূর্যমুখীর হাসিতে মুখরিত হাকালুকি হাওর

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:০৫

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরের সুর্যমুখীর হাসিতে দিগন্তে হলুদের আভা ছড়িয়েছে। বানিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হাওরের সুর্যমুখী ফুল নিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করছেন। এ যেন সূর্যমুখীর হাসিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে হাকালুকি হাওর। 

কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, হাকালুকি হাওর তীরের জুড়ী উপজেলায় প্রণোদনার আওতায় ২৩০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন কয়েকজন কৃষক। চাষকৃত সূর্যমুখী ফুলের মধ্যে হাইসান-৩৩, আরডিএস-২৭৫ জাতের আবাদ করা হয়েছে। বিনোদনের পাশাপাশি মূলত তেল উৎপাদনের লক্ষ্যে সরকার সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের প্রণোদনাসহ উৎসাহ দিচ্ছে।

সকালের সূর্যোদয় থেকে বিকেলের সূর্যাস্ত যখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ে, ঠিক তখনই হাকালুকির সৌন্দর্য যেন ফুটে উঠে সূর্যমুখীর হাসিতে। মৃদু রোদে দূর থেকে মনে হয়, সূর্য যেন মেলা বসিয়েছে। 

সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন হাওর পাড়ে ভীড় করেন পর্যটকরা। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সূর্যমুখী ফুলের সাথে জুড়ে নিজের ছবি আপলোড দিতে টিনেজ বয়সী ছেলে মেয়েরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। হাকালুকি হাওরে হলুদ ফুলের মনমাতানো সৌরভ আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের মায়ার ফসলি জমি। 

চাষিরা জানান, সূর্যমুখী চাষকরার পদ্ধতি মোটামুটি সহজ। প্রতি বিঘা জমিতে তিন কেজি বীজ, সামান্য সার ও কীটনাশক হলেই আর কোন কিছুর প্রয়োজন হয়না। সবকিছু মিলিয়ে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ৪-৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলেও তেল সংগ্রহ করার কোন মেশিন স্থাপন করা না হওয়াতে তেল সংগ্রহকরা নিয়ে দু:শ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।

চাষি কামরুল ইসলাম বলেন, হাকালুকি হাওরের পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলন খুবই ভালো হয়েছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সূর্যমুখীচাষ আরও স¤প্রসারণ করবো। সরকারের কাছ থেকে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে পরামর্শের পাশাপাশি বিনামূল্যে বীজ পেয়েছি। 

হাওর তীরের জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহমুদুল আলম খান জানান, সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকরা যাতে লাভবান হয় সেই লক্ষ্যে সরকার কৃষকদের প্রণোদনাদিচ্ছে। সূর্যমুখী ভোজ্যতেল হিসেবে গুণগতমানের দিক থেকে বেশ ভালো। বাজারে সূর্যমুখীর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় এবং হাওরের মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষের উপযোগী হওয়ায় এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে আমরা নিয়মিত উঠান বৈঠক ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি ফুল থেকে তেল বেরকরার প্রক্রিয়া কোন দু:শ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। সরিষা থেকে তেল বেরকরার মেশিন দিয়েই সূর্যমুখীর তেল সংগ্রহকরা সম্ভব। জুড়ীতে এধরনের মেশিন না থাকলেও কুলাউড়া উপজেলার স্কুল চৌমুহনী এলাকায় একটি মেশিন আছে। সেখানে কৃষকদের সুর্যমুখীর বিজ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

যাযাদি/ এম