বিজয়নগর এক গৃহবধূ ১ মাস ধরে নিখোঁজ, শ্বশুর-শাশুড়িসহ আটক ৩

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪৯

বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) নামে এক গৃহবধু নিখোঁজের ঘটনায় মামলায় গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেফতার করেছে বিজয়নগর থানা পুলিশ।

রবিবার ভোর রাতে পার্শ্ববর্তী মাধবপুর উপজেলার মনতলা এলাকায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ও মাধবপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় এক আত্মীয় বাড়িতে থেকে প্রধান আসামি নিখোঁজ গৃহবধূর ননদ জিয়াছমিন আক্তার পপি (৩০) গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে শনিবার বিকালে উপজেলার আমতলী বাজার থেকে গৃহবধূ খাদিজা আক্তার ময়নার শ্বশুর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর এলাকার মোঃ আজিজুল ইসলাম রমজান (৫৫), শ্বাশুড়ি রহিমা বেগম (৫১) কে আটক করা হয়।

তবে সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত গৃহবধূর সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় নিখোঁজ গৃহবধূর মা সুমি বেগম বাদী হয়ে বিজয়নগর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় শ্বশুর শ্বাশুড়ি ও ননদকে আসামী করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।  এটি কি নিখোঁজ না কি গুম তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।   

পুলিশ ও মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়,  প্রায়ই ৭ বছর পূর্বে বিজয়নগর উপজেলার  সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মো: রমজান মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী রাসেল মিয়ার সাথে একই উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতুরপুর গ্রামের সেলিম মিয়া বড় মেয়ে খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়।

স্বামী প্রবাসে থাকলে গৃহবধু ময়না তার ৫ বছর বয়সী কন্যা সন্তান তাবাচ্ছুবকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করতো। গত ১৯  জানুয়ারি বিকাল ৩ টায় খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) তার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। এক মাস যাবত তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজ মেয়ের সন্ধান না পেয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিজয়নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন নিখোঁজ ময়নার  মা সুমি বেগম।

এদিকে নিখোঁজ ময়না তার প্রবাসী স্বামীর কাছে মোবাইলে একটি ভয়েস বার্তা পাঠায়। ওই ভয়েস বার্তায় গৃহবধূ  জানায়, আমারে কিভাবে ভুলে থাকতেছো, আমাকে কি বাঁচাইবানা, আমি কোথায় আছি বলতে পারছি না। চারপাশে পাহাড় আর প্রচন্ড ঠান্ডা। আম্মা (শাশুড়ি) এবং আপা (স্বামীর ছোট বোন) জানে আমি কোথায় আছি। আমার মোবাইল পপি আপা কোথায় জানি রাখছে। তুমি পপি আপার সাথে কথা বল। এখানে অনেক ঠান্ডা।

স্বামীর কাছে ইমুর মাধ্যমে খাদিজা আক্তার ময়নার পাঠানো ভয়েস বার্তায় পরে স্বামী রাসেল মিয়া প্রবাস থেকে ময়নার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে ময়নার মা থানায় অভিযোগ করেন।  

এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুল ইসলাম বলেন, অপহরণ মামলায় এজাহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু ক্লু পাওয়া গেছে। গৃহবধূ উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।  

যাযাদি/ এম