চরফ্যাশনে জ্বীন তাড়ানোর নামে শিশুকে পিটিয়ে হত্যা, কবিরাজ গ্রেফতার

প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৪৯

চরফ্যাশন প্রতিনিধি

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশিভূষণ থানা এলাকায় শরীর থেকে জ্বীন তাড়ানোর কথা বলে ওমর ফারুক নামে সাত বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করেছে কবিরাজ। এ ঘটনায় শিশুর বাবার করা মামলায় অভিযুক্ত কবিরাজ তাসলিমা বেগমকে (৩২) গ্রেফতার করেছে শশিভূষণ থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শশিভূষণ থানা এলাকার রসুলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। শশিভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ওমর ফারুক দক্ষিণ আইচা থানা এলাকার চর মানিকা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. কামাল খাঁর ছেলে। গ্রেফতার হওয়া কবিরাজ তাসলিমা বেগম রাসুলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল জব্বার হাওলাদারের স্ত্রী।

নিহত ওমর ফারুকের বাবা কামাল খাঁ জানান, ওমর ফারুক বেশ কয়েক দিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। সে আবোল তাবোল কথা বলত। স্থানীয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও ফারুকের কোনো উন্নতি হয়নি। তাই সকালে দক্ষিণ আইচা থানা এলাকার কবিরাজ তাসলিমা বেগমের কাছে ওমর ফারুককে নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটিকে দেখে কবিরাজ জানায়, তার সঙ্গে জ্বীন রয়েছে, এ জন্য সে আবোল তাবোল কথা বলছে। তার শরীর থেকে জ্বীন তাড়াতে হবে।

এরপর ঘরের অন্ধকার একটি রুমের মধ্যে ওমর ফারুককে একা নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ওমর ফারুকের বাবা, মা ও নানা কবিরাজের ঘরের বাহিরে বসা ছিল।

ঘন্টাব্যাপী কবিরাজ তাসলিমা বেগম অন্ধকার একটি রুমের মধ্যে ওমর ফারুককে আটকে জ্বীন তাড়ানোর নামে বেধড়ক মারধর করে। তখন কবিরাজের নির্যাতনে শিশুটি চিৎকার শুরু করে। একপর্যায়ে কবিরাজ শিশুটির বুকের ওপর পা ও গলায় হাত দিয়ে চেপে ধরে। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

শশিভূষণ থানার ওসি এনামুল হক জানান, শিশুটির শরীর থেকে জ্বীন তাড়ানোর নামে কবিরাজ শিশুটিকে নির্মম নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। শিশুটির শরীরে নির্যাতনের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবার দায়ের করা মামলায় কবিরাজ তাসলিমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

যাযাদি/ এম