গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের নেতাকর্মীদের পাশে তামিম ইয়াহয়া

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:১৭

গোলাপগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
ছবি যাযাদি

বিএনপির এক দফা আন্দোলন করতে গিয়ে মামলায় আসামি হওয়া সিলেট-৬ আসনের (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তাসহ সার্বিক সহযোগিতা করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহইয়া আহমদ।

গত তিন মাসে ওই আসনের কারাবন্দি সকল নেতাকর্মীসহ গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া নেতাকর্মীদেরও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন তিনি।

জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার এলাকার রাজপথে অবস্থান নিয়ে পিকেটিংয়ে উপস্থিত থাকার জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তামিম ইয়াহয়া। ভোর ৬টায় গোলাপগঞ্জের হেতিমগঞ্জ এলাকায় তাঁর নেতৃত্বে পিকেটিং শুরু হলে বাধা প্রদান করে অস্ত্রধারী স্থানীয় ছাত্রলীগ। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীদের দায়ের কোপে গুরুতর আহত হন তামিম ইয়াহয়া ও যুবদল নেতা আব্দুস শহিদ। পরে আব্দুস শহিদকে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় সিলেট জেলা বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহইয়া আহমদ, যুবদল নেতা আব্দুস শহিদ, ফুলবাড়ি ইউপির ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মুজিবুর রহমান দুলাল, ছাত্রদল নেতা শাহ আলম, বাবলু ওরফে প্রিন্স বাবলু ওরফে পাপ্পু ও আল আমিনকে এজাহার নামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬০ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ।

ওই মামলায় পুলিশের পৃথক অভিযানে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের ১১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় আড়াল থেকে নেতাকর্মীদের আইনী সহায়তা প্রদানের জন্য একটি সেল গঠন করেন তামিম। অ্যাডভোকেট শাহানাসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবীকে সেলের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেন তিনি। ওই সেলে কাজ করেন আরও ৫ জন আইনজীবী। প্রতিদিনই জাতীয়তাবাদী নেতাকর্মীদের জামিনের শুনানি করেন এই সেলের প্রতিনিধিরা। আইনি সহায়তা ছাড়াও কারাবন্দি নেতাকর্মীদের জেলখানার পিসিতে নিয়মিত টাকা দেয়ার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় এই সেল থেকে। সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের পাশাপাশি সেলের সার্বিক সহায়তা দেন তামিম ইয়াহয়া। এছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের ছাড়াও অসহায় সাধারণ মানুষকে মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আইন সহায়তা সেলের অ্যাডভোকেট শাহানা জানান, গত ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালনের পর থেকে গোলাপগঞ্জ থানায় ৩-৪টি মামলা হয়। ওইসব মামলায় প্রায় ৩ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়েন অন্যান্য নেতাকর্মীরাও। এসময় কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীকে আইনি সহায়তা দেয়া হয়েছে এই সেল থেকে। দীর্ঘ তিন মাস কারাবাসের পর এক এক করে জামিনে মুক্ত হন কারাবন্দিরা।

তিনি বলেন, কারাবন্দি নেতাকর্মীদের জন্য পিসিতে টাকা পাঠানোসহ তাদের জামিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এই সেল থেকে। সেইসাথে কারাবন্দি ও পলাতক নেতাকর্মীদের পরিবারের খোঁজ-খবরও নিয়েছেন তামিম।

২ নভেম্বর গ্রেফতারের পর ১৮ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি পান গোলাপঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব তাজউদ্দিন। ২৯ অক্টোবর গ্রেফতার হয়ে ২৩ জানুয়ারি কারামুক্ত হন যুবদল নেতা আব্দুস শহিদ। এরপর বিভিন্ন তারিখে, সুহেল রেজা, শাহ আলম, পাপ্পু, মাবরুল, জামিল, সানি, নাঈম ও সানি আলম প্রমুখ জামিনে মুক্তি লাভ করেন।

এদিকে, কারামুক্ত প্রত্যেক নেতাকর্মীদের বাড়িতে যান তামিমপত্নী রুজনা বেগম। এসময় তিনি তামিম ইয়াহয়ার পক্ষে সকলের শারীরিক খোঁজ-খবর নেন ও অভিনন্দন-সমবেদনা জানান।

এ ব্যাপারে তামিম পত্নী রুজনা জানান, ‘কারাবন্দি ও পলাতক নেতাকর্মীদের সহায়তায় তামিম ইয়াহয়ার হাত প্রসারিত ছিল। তিনি সব সময় তাদের খোঁজ নিয়েছেন। তার পক্ষ থেকে আমি নিজে ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে দেখা করেছি। তাদেরকে শান্ত¦না দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘সিলেট-৬ আসনে জাতীয়তাবাদী পরিবারের কাছে তামিম ইয়াহয়া একটি আস্থার নাম। এখানকার নেতাকর্মীরা তাকে অন্তর থেকে ভালো বাসেন। তার ডাকে সাড়া দেন। যেকোনো কর্মসূচিতে হাতে হাত রেখে রাজপথে নেমে আসেন। এসব ভুলের যাওয়ার নয়। সব সময়ই নেতাকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞতাবোধ করেন তামিম। তিনিও নেতাকর্মীদের অন্তর থেকে ভালো বাসেন। তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। তার এই ভালোবাসা ও পাশে থাকার চেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।

জামিনে কারামুক্ত নেতাকর্মীরা জানান, ‘গত বছর নভেম্বরের প্রথম দিকে আমরা পর্যায়ক্রমে গ্রেফতার হই। তিন মাস কারাবাসের পর জানুয়ারির শেষে ও ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে জামিনে মুক্ত হই। এই সময় আমাদেরকে আইনী সহায়তাসহ আমাদের প্রত্যেকের পরিবারে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন তামিম ইয়াহয়া। তিনিই আমাদের জামিনের ব্যবস্থা করেছেন। জামিনে মুক্তির পরও আমাদের বাড়িতে লোক পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং সার্বিক সহযোগিতা করেছেন।

যাযাদি/ এস