নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে মেয়র প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৪৩

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা উপ নির্বাচনে প্রচারে বাঁধাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নারিকেল গাছ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মাহতাব উদ্দিন কল্লোল।

রোববার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিক সফিউদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

মুন্সীগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবের প্ররোচনায় প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা, হুমকি-ধমকি দিয়ে আতঙ্কিত পরিবেশ তৈরি করে ভোট কাস্টিং কমানোর অভিযোগ করে নিরপেক্ষ প্রশাসনিক আচরণের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি করে নারিকেল গাছ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মাহতাব উদ্দিন কল্লোল বলেন, নির্বাচনী প্রচার শুরুর আগ থেকেই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবের সহধর্মিণী চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের কর্মী-সমর্থকরা আমার নেতাকর্মীদের হামলা, হুমকি-ধমকি দিয়ে চলেছেন। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর এই নিপীড়নের মাত্রা আরও বেড়েছে।

প্রথম দিন গেল ২৩ ফেব্রুয়ারী পৌরসভার রণছ রুহিতপুর এলাকায় আমার পক্ষে ভোট চাওয়ার অপরাধে তাদের সমর্থক অপু আমার মহিলা কর্মী লাকিকে গালিগালাজ ও শ্লীলতাহানি করেছে। তার বাড়িঘরে হামলা করেছে। ওইদিন বিকালে শহরের মানিকপুর এলাকায় আমার সহধর্মিণী জেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক মোরশেদা বেগম লিপির পথরোধ করে তার সাথে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী শান্তকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে জখম করেছে। পরদিন গতকাল ২৪ ফেব্রুয়ারী শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকায় ভোট চাইতে গেলে জগ প্রতীকের সমর্থক সোহেল আমার মহিলা কর্মী পুতুলসহ তার সাথে থাকা মহিলাদের লাঞ্চিত ও অপদস্ত করে। একইদিন দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকায় জগ প্রতীকের সমর্থক মনির আমার মহিলা কর্মী হালিমা, মঞ্জু ও সাফাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে এগিয়ে আসে। এসময় তারা স্থানীয়দের সহয়তায় প্রাণে বেঁচে ফেরে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনকে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিন ভয় পাচ্ছেন। তার পেছনে যে শক্তিটি কাজ করছে তাদের উদ্দেশ্য মূলত সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করা ও মুন্সিগঞ্জ পৌরসভাকে 'টেন্ডারবিহীন' লুটপাটের অভয়ারণ্যে পুন:প্রতিষ্ঠা করা।

চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিন চাইছেন একটি অশান্ত পরিবেশ। যেখানে শুধুমাত্র তার পছন্দের, কালোটাকার বিনিময়ে কেনা ভোটাররাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং শুধুমাত্র তার পক্ষেই ভোট দিবেন। কোন সাধারণ ভোটার ভোটকেন্দ্রে যেয়ে তাদের পছন্দ অনুযায়ী প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে এমন পরিবেশকে ভয় পাচ্ছেন আমার প্রতিদ্বন্দ্বী এই প্রার্থী। আপনারা জানেন, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভা উপ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। এমনিতেই বিরোধীদলবিহীন এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হুমকি-ধমকির মাধ্যমে ভোট কাস্টিং একেবারে তলানিতে নিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি মনে করি, যেহেতু আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মাননীয় সংসদ সদস্যের সহধর্মিনী সেহেতু এ নির্বাচনে মাননীয় সংসদ সদস্যের প্রভাব বিস্তাররের ধারণাটা অমূলক নয়।

তিনি বলেন, আমার প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা, সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভয়ভীতি ছড়িয়ে আতঙ্কিত করা, আমার বাড়িঘরে আসা নেতাকর্মীদের পথরোধ করে মারপিট করা, এমনকি আমার বাড়িতে হামলা চেষ্টার অভিযোগগুলো আমি লিখিত আকারে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভা উপ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা পুলিশ সুপার, মুন্সিগঞ্জ সদর থানাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থাকে অবগত করেছি। তারা আমাকে এসব বিষয়ে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করছেন। কিন্তু অপকর্মকারীরা এতে একটুও ক্ষান্ত হয়নি। আমি বিশ্বাস করি প্রশাসনের সকল বিভাগ এই ব্যাপারে অতি সত্বর তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন।

তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আমি একটি নিরপেক্ষ প্রশাসনিক আচরণের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার চাই। যেখানে জনগণ প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতনের শিকার বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

যাযাদি/ এস