নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২৪, ২১:০২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের এক সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এদিকে, টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করতে না পেরে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কলেজ শিক্ষক আব্দুল খালেক চৌধুরী ডলারের বিরুদ্ধে। 

কলেজ ছাত্রী ও তার পরিবারের দাবি, ফাঁকা বাড়িতে কৌশলে কলেজছাত্রীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল খালেক চৌধুরী ডলার। এরপর বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় ব্ল্যাকমেইল করে করা হয় বিভিন্নভাবে নির্যাতন। 

এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বারবার প্রস্তাব দেন শারীরিক সম্পর্কের। রাজি না হয়ে উল্টো ঘটনা প্রকাশের হুশিয়ারী দিলে দেয়া হয় প্রাণনাশের হুমকি৷ এসব অভিযোগ তুলে কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবদেন করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের এক ছাত্রী। 

জানা যায়, এনিয়ে গত রবিবার নিজেকে জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে আত্নহত্যার হুমকি দিয়ে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাস দেন ওই কলেজ ছাত্রী। তার দাবি, এসব ঘটনার দামাচাপা দিতে নগদ তিন লাখ টাকা নিয়ে লোক পাঠিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। 

তাতেও রাজি না হওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে তাদেরকে। বাধ্য হয়ে কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্রী। 

কলেজ ছাত্রী বলেন, ২০২২ সালে তিনি আমাকে কলাকৌশল করে তার নিজস্ব ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে আমার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণ করেন। 

এসময় তিনি হুশিয়ারি দেন, তোর সাথে আমার যা হলো যদি তুই ফাঁস করিস তাহলে আমি তোকে জবাই করে ফেলব, প্রয়োজনে গুম করে নিবো। 

এতে আমাকে বাধা দেয়ার মতো কোন ব্যক্তি চাঁপাই-এর বুকে এখনো জন্মায়নি। তারপর তিনি আমাকে আরও হুমকি দেন যে, কলেজ থেকে পাশ করে যেতেই দেব না, তোর পাশ-ফেল সম্পূর্ণ আমার হাতের মুঠোই।

কলেজছাত্রী আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে আমি যখন ক্লাসে যেতাম তখন তিনি কলেজের পিয়নের মাধ্যমে ডেকে পাঠাতেন ও বলতেন, আমাকে তোমার ফোনটা দিয়ে তুমি এখন ক্লাসে চলে যাও। তারপর দেখতাম আমার ফোনে তার সাথে সকল চ্যাটলিষ্ট ও কল রেকর্ড ডিলেট করে দিয়েছেন।   

এদিকে, এ ঘটনায় কলেজে মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) দুপুরে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। এসময় বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। এমনকি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন তারা। 

এবিষয়ে, ক্যামেরার সামনে কথা বলতে নারাজ কলেজ শিক্ষক আব্দুল খালেক চৌধুরী। মুঠোফোনে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র চলছে। আমাকে বির্তকিত ও এখান থেকে চাকুরিচ্যুত করতে একটি কুচক্রী মহল কাজ করছে। 

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে স্নাতক পড়ুয়া ছাত্রীর অভিযোগের ভিক্তিতে কলেজের শিক্ষক পরিষদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. আব্দুর রউফ বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তদন্তে যা পাওয়া যাবে, কলেজ কর্তৃপক্ষকে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে।

যাযাদি/ এম