চট্টগ্রাম-১১ আসনের (বন্দর-পতেঙ্গা) সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এম এ লতিফকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নগরের মাদারবাড়ি নসু মালুম মসজিদ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীনা জানান, শুক্রবার (৯ আগস্ট) বাদ জুমা এমপি লতিফ স্থানীয় নসু মালুম মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। জুমা আদায় শেষে তিনি স্থানীয় জনসাধারণের সাথে কুশল বিনিময় করেন। পরে তার ভাগিনা আদনানুল ইসলাম চৌধুরীর ঘরে যাওয়ার পর স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ খবর পেয়ে তার ভাগিনার বাড়ি ঘিরে রাখে। পরে সেনাবাহিনী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে।এ সময় অনেকে লতিফকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগানও দেন।
জানা গেছে, এমএ লতিফকে আটকের সময় তার অনুসারী কিছু লোক ক্ষুব্ধ জনতার ওপর হামলার চেষ্টা করলেও পরে তারা পালিয়ে যায়। লতিফও ওই সময় একদফা পালানোর চেষ্টা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, নগরের মাদারবাড়ি ৩০নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর মাজহারুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়িতে এমপি লতিফ তার ভাগিনা আদনানুল ইসলামের বাড়িতে এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন।
সাবেক সংসদ সদস্য লতিফের বিরুদ্ধে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দমন-পীড়নে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া গত বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য নুরুল আজিম রনিকে আটক করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামে বিক্ষোভরত ছাত্র-জনতার ওপরে হামলার ঘটনায় নুরুল আজিম রনির নাম আসে। পরে ঢাকার হাসপাতালে আহত কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে দেখতে গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার সঙ্গে কথা বলেন। বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সহিংসতায় জড়িত এ দুজনই সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী।
গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে সমাবেশ ডাকে শিক্ষার্থীরা। একই দিনে একই স্থানে সমাবেশ করার ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আজিম রনিও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওইদিন সকাল থেকে ষোলশহর রেলস্টেশনে দলবল এবং অস্ত্রধারীদের নিয়ে অবস্থান নেন রনি। একপর্যায়ে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর বাবর ও জাফর নামে আরেক অস্ত্রধারী সেখানে যান। সংঘাত এড়াতে শিক্ষার্থীরা পরে মুরাদপুর এলাকায় সমাবেশ করেন। এরপর রনি ও বাবর একদল অস্ত্রধারী নিয়ে ষোলশহর থেকে মুরাদপুর গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ লিপ্ত হন। ওই সময় অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করেন যুবলীগের জাফর, ডাকাত ফিরোজ, মিঠু ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দেলোয়ার। বাবরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাফর প্রাইভেটকার নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র বিলি করেন। ওইদিনের সংঘর্ষে প্রাণ হারান চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ওয়াসিম আকরাম, মুরাদপুরের ফার্নিচার দোকানের কর্মী মোহাম্মদ ফারুক ও কলেজছাত্র ফয়সাল আহমদ শান্ত।
যাযাদি/ এসএম